সারাদিন ঘুমিয়েও ক্লান্ত? হতে পারে 'স্লিপিং বিউটি সিনড্রোম'

শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫ ৬:২৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
প্রতিদিন অনেক ঘুমিয়েও যদি ক্লান্তি না কাটে, ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুম পায়—তাহলে আপনি হয়তো ‘স্লিপিং বিউটি সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় Kleine-Levin Syndrome (KLS)। এটি অত্যন্ত বিরল একটি ঘুম সংক্রান্ত রোগ, যা প্রতি ১০ লাখে মাত্র ১-২ জনের মধ্যে দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়ঃসন্ধিকালে থাকা ছেলেদের মধ্যে এই রোগটি লক্ষ করা যায়।
কীভাবে চিনবেন এই রোগ?
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি দিনে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটাতে পারেন। ঘুম থেকে জেগে উঠলেও তারা বিভ্রান্ত থাকেন, মেজাজ থাকে খারাপ এবং মানসিকভাবে অস্থিরতা দেখা দেয়। অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়া, স্মৃতিভ্রষ্টতা, এবং মনোযোগের অভাবও দেখা যায়।
কেন হয় এই রোগ?
KLS-এর নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে গবেষকদের মতে, কিছু সম্ভাব্য কারণ হতে পারে—
বংশগত প্রভাব
মস্তিষ্কের ঘুম-জাগরণ চক্রে গোলমাল
হরমোন ভারসাম্যের সমস্যা
কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়?
এ রোগের স্থায়ী কোনো চিকিৎসা নেই। তবে লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:
১. ওষুধের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে নিচের কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়:
স্টিমুল্যান্টস (উদ্দীপক ওষুধ): ক্লান্তি ও অমনোযোগ কাটাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট: মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা কমাতে কার্যকর।
মুড স্ট্যাবিলাইজার: আচরণগত ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
২. স্বাস্থ্যকর জীবনধারা
ঘুমের রুটিন মেনে চলা: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো ও জাগা।
মানসিক চাপ কমানো: মেডিটেশন, হালকা ব্যায়াম ও সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা।
নিয়মিত রুটিন অনুসরণ: দৈনন্দিন জীবনকে কাঠামোবদ্ধ রাখলে মানসিক ভারসাম্য রক্ষা সহজ হয়।
৩. কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি (CBT)
এই থেরাপি রোগীকে তার নিজস্ব আচরণ, চিন্তা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পাশাপাশি রোগীকে শেখানো হয় কীভাবে নিজের সমস্যার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় ও দৈনন্দিন জীবনে স্বাভাবিকভাবে চলতে হয়।
উপসংহার:
যদিও Kleine-Levin Syndrome বিরল, তবুও যদি ঘন ঘন ঘুম, ক্লান্তি ও মনোযোগে ঘাটতি আপনার জীবনে সমস্যা তৈরি করে, তাহলে একজন নিউরোলজিস্ট বা ঘুম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
১০৫ বার পড়া হয়েছে