অর্থনীতি

বাংলাদেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক হ্রাসে ইতিবাচক সাড়া যুক্তরাষ্ট্রের

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫ ৫:৪২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান তৃতীয় দফা আলোচনায় পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

তিনি জানান, ২৯ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত আলোচনার প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (USTR) দপ্তরের কর্মকর্তারা বাংলাদেশকে শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে "সবুজ সংকেত" দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময় আজ সকাল ৮টায় দেওয়া এক বার্তায় বাণিজ্য সচিব বলেন, "আমাদের আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে—বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানো হবে। শুল্ক কতটা কমবে, তা এখনই বলা না গেলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক হবে।"

আলোচনা ও প্রতিনিধিদল
গতকাল (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রথম দিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ আলোচনা চলবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। দলে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী এবং ওয়াশিংটন দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারাও ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ, যাঁর সঙ্গে রয়েছেন শুল্ক ও বাণিজ্যবিষয়ক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

পাল্টা শুল্কের প্রেক্ষাপট
১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর আগে দেশটির তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যে গড় শুল্কহার ছিল প্রায় ১৫.৫ শতাংশ, যা সাম্প্রতিক ঘোষণায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২-২৩ শতাংশে।

চলতি বছরের ২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬০টি দেশের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। পরে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত হলেও ৮ জুলাই নতুন করে বাংলাদেশের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে আরও ১০ শতাংশ সার্বিক বৃদ্ধি।

বাংলাদেশের অবস্থান ও কূটনৈতিক উদ্যোগ
বাণিজ্য সচিব জানান, ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো অবস্থানপত্রের ভিত্তিতে আলোচনায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের যুক্তি—যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ভিয়েতনামের ঘাটতি ১২৩ বিলিয়ন। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্কে সমঝোতা করেছে। বাংলাদেশ আশা করছে, পাল্টা শুল্কের হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে রাখা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, “যুক্তরাষ্ট্র আর আগের মতো কঠোর অবস্থানে নেই। আমাদের ওপর শুল্কহার কমানো হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।”

প্রতিশ্রুতি ও প্রস্তুতি
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার অঙ্গীকার করেছে। একই সঙ্গে প্রতিবছর ৭ লাখ টন করে গম আমদানির জন্য ৫ বছরের একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয়েছে। সয়াবিন, এলএনজি, তুলা, সামরিক সরঞ্জামসহ আরও বিভিন্ন পণ্য আমদানির পরিকল্পনাও রয়েছে, যাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা সম্ভব হয়।

১৩৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন