শীতের আমেজে ছুটির আনন্দে পর্যটকে মুখর কুয়াকাটা
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সরকারি টানা তিন দিনের ছুটি ও শীতের হালকা আমেজে পর্যটকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বিরল দৃশ্যের জন্য খ্যাত পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে পর্যটকের আগমন শুরু হয়, যা দিনভর অব্যাহত থাকে।
পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম হয়ে ওঠে সৈকতের জিরো পয়েন্ট, লেম্বুরবন, গঙ্গামতি, জাতীয় উদ্যান ও সংলগ্ন বনাঞ্চল। কেউ সৈকতের বালুচরে আনন্দঘন সময় কাটাচ্ছেন, কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে সমুদ্রের নোনা জলে সাঁতার কাটছেন, আবার অনেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পর্যটকদের উপস্থিতিতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যও।
হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউসগুলোতে শতভাগের কাছাকাছি বুকিং লক্ষ্য করা গেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট দোকানপাট, ফিস ফ্রাই, আচার ও হস্তশিল্পের ব্যবসায়েও বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ।
সৈকতসংলগ্ন ফিস ফ্রাই ব্যবসায়ী বেলাল জানান, দীর্ঘদিন পর প্রত্যাশিত সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে পর্যটন ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিন।
আচার ব্যবসায়ী মো. রহমান বলেন, আজ কুয়াকাটায় লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হয়েছে। এতে স্থানীয় সব ব্যবসায়ীর মুখে হাসি ফুটেছে।
হোটেল সাউথ বিচের মালিক মো. সোহেল মিয়া জানান, তার হোটেলের সব কটি কক্ষ আগেই বুকিং হয়ে গেছে। তিনি বলেন, পর্যটন মৌসুমে এমন চাপ স্বাভাবিক হলেও সামনে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে। তবে নির্বাচন শেষে আবার পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. রবিন বলেন, কুয়াশার কারণে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত পুরোপুরি উপভোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে শীতল আবহাওয়া ও পরিবেশ তার ভালো লেগেছে।
রংপুর থেকে আগত পর্যটক নাহিদ জানান, এবার পর্যটকের সংখ্যা বেশি থাকায় হোটেলে রুম পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পর্যটন স্পটগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি জানান।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ জানান, প্রায় ৯৫ শতাংশ হোটেল কক্ষ বুকিং রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, ছুটির এই তিন দিনে লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার হামিদ বলেন, পর্যটন মৌসুমে কুয়াকাটায় ভিড় বাড়ায় পৌর প্রশাসন, থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও নৌ-পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের সেবায় প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
১০৫ বার পড়া হয়েছে