ওড়িশায় বাঙালি মুসলিম শ্রমিক নিহত: রাজনৈতিক মহলের নীরবতায় প্রশ্ন
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬:২৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ওড়িশার সাম্বলপুরে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার তরুণ শ্রমিক জুয়েল রানাকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ঘটনার পর মানবাধিকার সংগঠন ও সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানালেও শাসক বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার তরফে এখনো প্রকাশ্য কোনও মন্তব্য আসেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ডিসেম্বর রাতে শান্তিনগর এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করা কয়েকজন বাঙালি শ্রমিকের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের ঝামেলা বাঁধে। ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় জুয়েল রানা (১৯) হাসপাতালে মারা যান। ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং তদন্ত চলছে।
সহকর্মী শ্রমিকদের অভিযোগ, হামলাকারীরা তাদের পরিচয় যাচাইয়ের নাম করে অপমান করে এবং ধর্মীয় বিভেদমূলক মন্তব্য করে। তবে ওড়িশা পুলিশের দাবি, ঘটনা ব্যক্তিগত বিবাদ থেকে শুরু হয়ে মারামারিতে রূপ নেয়; এর পেছনে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের সরকার ধিক্কার জানিয়ে ওড়িশা সরকারের কাছে দ্রুত তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ধর্ম ও জাতিগত পরিচয়ের নামে এমন সহিংসতা মেনে নেওয়া যায় না।” অপরদিকে বিজেপি নেতৃত্ব এবং ঘনিষ্ঠ মনে করা কিছু সংবাদমাধ্যমের নীরবতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, শ্রমজীবী মুসলমান ও বাঙালি সম্প্রদায়ের ওপর এ ধরনের সন্দেহজনক আচরণ ভারতে ক্রমবর্ধমান সামাজিক উত্তেজনার প্রতিফলন। সাংবিধানিক সমতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূল্যবোধ রক্ষায় নাগরিক সমাজের সচেতন ভূমিকা এখন আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন।
১২৮ বার পড়া হয়েছে