ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি কমে রপ্তানি ও রাজস্বে ঊর্ধ্বগতি
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:২১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর ব্যবহার করে সাম্প্রতিক অর্থবছরে রপ্তানি ও রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
যদিও একই সময়ে আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে, তবুও সরকারের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ভোমরা ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ২৩ ধরনের দেশীয় পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সুতা ও জুট ইয়ার্ন, ওয়েস্ট ও ক্লিনিং ক্লথ, ফার্নিচার, মশারির নেট, প্লাস্টিক বাথরুম ফিটিংস, তাঁতের শাড়ি, লুঙ্গি, ট্রাভেল ব্যাগ, রেডিমেড গার্মেন্টস, মাছ ধরার জাল, তিলের তেল, জুস, চিপস ও লিচু।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৫৯ হাজার ৬৯৩টি পণ্যবাহী গাড়িতে প্রায় ৮ হাজার ৭৫ কোটি টাকা মূল্যের ২০ লাখ ৮২ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করা হয়েছে। এ থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৯৭৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এর আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে ৬৩ হাজার ৯০২টি গাড়িতে ৬ হাজার ৪৭৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা মূল্যের ২৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬২ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছিল। সে সময় রাজস্ব আয় ছিল ৯০৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ আমদানি কমলেও সর্বশেষ অর্থবছরে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অন্যদিকে রপ্তানিতে ইতিবাচক চিত্র দেখা গেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ২২ হাজার ৯৩৭টি গাড়িতে ৩ হাজার ৪০৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের ২ লাখ ৮৬ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৫৮০টি গাড়িতে ৩ হাজার ৯০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা মূল্যের ২ লাখ ৭৪ হাজার ১১০ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। এ হিসাবে রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ।
রাজস্ব আয়ের দিক থেকেও ভোমরা শুল্ক স্টেশন অগ্রগতি ধরে রেখেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। পরের অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ৯২ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা বলেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশও রপ্তানি খাতে নানা সুবিধা পাচ্ছে। ভোমরা স্থলবন্দর থেকে কলকাতার দূরত্ব কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এই বন্দর ব্যবহার করতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। এতে আমদানি-রপ্তানি যেমন বাড়ছে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভোমরা স্থলবন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান খান জানান, ডলার সংকট ও সাম্প্রতিক আর্থিক পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরে আমদানিতে কিছুটা চাপ পড়েছে। তবে অবশিষ্ট সময়ে এই ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বর্তমানে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে খাদ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, পোশাক ও কসমেটিকসসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য, মাছ ও বিভিন্ন শিল্পজাত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
১১৭ বার পড়া হয়েছে