শহীদ ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মরদেহ শনিবার দেশে আসছে
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫:৫০ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মরদেহ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) স্বদেশে আনা হচ্ছে।
দেশে পৌঁছানোর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আনুষ্ঠানিকতায় তাদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হবে।
গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেইসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর চালানো ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় সদস্য শহীদ হন এবং আটজন আহত হন। আহতদের কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আহতদের কয়েকজন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন, বাকিরাও শঙ্কামুক্ত।
হামলায় শহীদ শান্তিরক্ষীরা হলেন- নাটোরের করপোরাল মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম ও সৈনিক শান্ত মন্ডল, রাজবাড়ীর সৈনিক শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া। আহতদের মধ্যে রয়েছেন- লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামানসহ মোট আটজন, যাদের মধ্যে তিনজন নারী শান্তিরক্ষী।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের এই আত্মত্যাগ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশের অঙ্গীকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। জাতিসংঘের পতাকাতলে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গের শপথ নিয়েই তারা সংঘাতপূর্ণ এলাকায় কাজ করছিলেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ১৯৮৮ সালে ইরান-ইরাক সামরিক পর্যবেক্ষক মিশনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। বর্তমানে ১০টি দেশে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছে দেশের সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ ও বেসামরিক সদস্যরা। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ১৬৮ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৭২ জন।
বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব, সাহস ও মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। শনিবার দেশে ফিরছে সেই বীর শান্তির সারথীদের মরদেহ- যারা নীল হেলমেট পরে বিশ্বশান্তির পথে সর্বোচ্চ ত্যাগের নজির রেখে গেলেন।
১১৬ বার পড়া হয়েছে