গুম প্রতিরোধ অধ্যাদেশসহ ৩ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অনুমোদন
বৃহস্পতিবার , ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বার্তায় বলা হয়, গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ন্যূনতম পাঁচ বছর ধরে গুম থাকলে এবং জীবিত ফিরে না এলে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডিসাপিয়ার্ড’ বা ‘গুম’ হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে। একই সঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল’-এর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগের সুযোগ থাকবে। ভুক্তভোগী বা অভিযোগকারী চাইলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া, গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রী বা তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যরা কমিশনের পূর্বানুমতি ছাড়াই ওই ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবেন।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর মাধ্যমে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও অধিক্ষেত্র স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে। বিরল ও অনন্য এই ইকোসিস্টেম রক্ষায় জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সংরক্ষিত হাওর ও জলাভূমি এলাকা ঘোষণা, নিষিদ্ধ কার্যক্রম চিহ্নিতকরণ এবং এসব অপরাধের জন্য শাস্তির ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ অধ্যাদেশে হাওর ও জলাভূমি এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ব্যতিক্রম ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়, স্থানীয় অংশীজনদের সম্পৃক্ততা এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে নতুন করে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতদিন জেনেভায় অবস্থিত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকেই জাতিসংঘ ও দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী ও কৌশলগত অংশীদার হওয়ায় বার্নে দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজন রাষ্ট্রদূত, ফার্স্ট সেক্রেটারি ও প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হবে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মোট ৮২টি মিশন রয়েছে।
এছাড়া বৈঠকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির গুরুতর অসুস্থতা নিয়েও আলোচনা হয়। তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান নিয়মিতভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিঙ্গাপুরে গিয়ে সরাসরি হাদির চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করছেন।
বৈঠকে এবছর মহান বিজয় দিবস সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ধন্যবাদও জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
১১৪ বার পড়া হয়েছে