ফয়সালের পালাতে ব্যবহৃত গাড়ি ভাড়ার পেছনের তথ্য ফাঁস
বৃহস্পতিবার , ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩:৩০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের পালাতে সহায়তার বিষয়ে আদালতে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে নুরুজ্জামান নোমানীর রিমান্ড শুনানির সময় এসব তথ্য উঠে আসে।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে আদালত নুরুজ্জামান নোমানীর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শুনানিতে নুরুজ্জামান নোমানী জানান, ঘটনার দিন ১২ ডিসেম্বর ফয়সাল করিম মাসুদ একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করেন এবং গাড়িটির গন্তব্য তিনবার পরিবর্তন করেন। প্রথমে গাড়িটি ঢাকার মৎস্য ভবনের সামনে পাঠাতে বলা হলেও পরে জুমার নামাজের পর আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজারে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। সর্বশেষ গাড়িটি ধামরাই উপজেলার কালামপুরে পাঠাতে বলা হয়। সেখান থেকেই ফয়সাল গাড়িতে উঠে ময়মনসিংহে পালিয়ে যান।
নুরুজ্জামান দাবি করেন, গাড়ি ভাড়ার সূত্রেই ফয়সাল করিমের সঙ্গে তার পরিচয়। গত নয় মাস ধরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি ফয়সালের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতেন। তবে ঘটনার আগে তিন মাস ধরে তাদের সরাসরি দেখা হয়নি।
তিনি আরও জানান, হত্যাচেষ্টার দিন ফয়সাল পারিবারিক জরুরি কারণ দেখিয়ে গাড়ি ভাড়া চান। শুরুতে সব গাড়ি ট্রিপে থাকায় তিনি অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে বন্ধু সুমনের গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন।
আদালতে দেওয়া বক্তব্যে নুরুজ্জামান বলেন, মৎস্য ভবনের সামনে গাড়ি পাঠানোর পর ফয়সাল ফোন করে জানান সেখানে যাবেন না এবং জুমার পর বিএনপি বাজারে গাড়ি পাঠাতে বলেন। পরে সেখান থেকেও চালককে না তুলে শুধু গাড়িটি কালামপুরে পাঠানোর নির্দেশ দেন ফয়সাল।
এ সময় বিচারকের প্রশ্নে নুরুজ্জামান জানান, সংশ্লিষ্ট গাড়িচালক সুমনকে তিনি চেনেন এবং তাকেও আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডের বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় চলাচলের সময় মোটরসাইকেল আরোহী দুজনের একজন শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে শনাক্ত করেছে। তারা হলেন- ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান (প্রধান সন্দেহভাজন শুটার) এবং আলমগীর হোসেন (মোটরসাইকেল চালক)। এ ঘটনায় ফয়সাল করিমের স্ত্রী, প্রেমিকা ও শ্যালককেও গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
২২৬ বার পড়া হয়েছে