সর্বশেষ

জাতীয়সিঙ্গাপুরে শরীফ ওসমান হাদির অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক : চিকিৎসক
বিজয় দিবসে আকাশে লাল-সবুজের গৌরব, ৫৪ প্যারাট্রুপারের বিশ্বরেকর্ড
রাজধানীতে বিজয় র‍্যালি, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙা বাড়ির সামনে কর্মসূচি পালন
মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা
মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
৫৫তম মহান বিজয় দিবস আজ
বিজয় দিবসে বিভাজন ও হিংসা পরিহারের অঙ্গীকারের আহ্বান তারেক রহমানের
সারাদেশবিজয় দিবসে সাভার স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, শ্রদ্ধায় মুখর
সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত
শার্শায় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পন
আন্তর্জাতিকবিজয় দিবসে মোদির পোস্টে অনুপস্থিত বাংলাদেশের নাম
১৯৭১-এর বিজয় দিবস স্মরণে বিবৃতি দিল ভারতের সেনাবাহিনী
মরক্কোর সাফিতে আকস্মিক বন্যায় ৩৭ জনের প্রাণহানি
খেলাআইপিএল নিলামে ইতিহাস গড়লেন ক্যামেরন গ্রিন, সর্বোচ্চ দামি বিদেশি খেলোড়ায়
মতামত

মোদির বিজয় দিবস পোস্টকে বাংলাদেশের ওপর প্রকাশ্য আগ্রাসন

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৭:০৫ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক্স (X)–এ দেওয়া বার্তায় বাংলাদেশকে একবারও উল্লেখ না করে শুধু “India’s historic victory in 1971” এবং ভারতীয় সেনাদের অবদানের কথা তুলে ধরায় ঢাকায় আইন উপদেষ্টা, ছাত্রনেতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে।

সমালোচকদের ভাষ্যে, এই ভাষা আসলে ১৯৭১–এর মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীয় নায়ক বাংলাদেশ ও বাঙালি জনগণকে আড়াল করে যুদ্ধটিকে শুধু ভারতের একক অর্জন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা।

আইন উপদেষ্টা ও ছাত্রনেতার ভাষ্য

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ছিল বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। India was merely an ally in this victory, nothing more.” তিনি এই পোস্টকে “বন্ধুত্বহীন ও কূটনৈতিকভাবে অসংবেদনশীল” আখ্যা দিয়ে বলেন, মোদি কার্যত বাংলাদেশের বিজয়কে ভারতের একক বিজয়ে রূপ দিতে চাইছেন, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সার্বভৌমত্বের প্রতি অবমাননা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহও মোদির পোস্টের স্ক্রিনশট দিয়ে লিখেছেন, “This is Bangladesh’s Liberation War… But Modi has claimed that it was solely India’s war and achievement. In doing so, they’ve completely ignored the existence of Bangladesh.” তিনি একে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সরাসরি হুমকি বলে উল্লেখ করে এই ন্যারেটিভের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি–র কড়া প্রতিবাদ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির বিদেশবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসাইন এক্স–এ লিখেছেন, “I strongly condemn and protest against Narendra Modi’s misleading statement on 16th December, Bangladesh’s Victory Day… Modi’s words clearly undermine our liberation war, our sovereignty, our martyrs and our dignity.” তাঁর মতে, এমন বক্তব্য বাংলাদেশ–ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্যও শুভ নয়।
ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর এক বিবৃতিতে মোদির বক্তব্যকে “বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি অবমাননাকর” বলা হয় এবং বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে এমন মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
সবচেয়ে কঠিন ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ভারতের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ১৯৭১–এর ইতিহাসকে নিজেদের মতো করে লিখতে চায়; বাংলাদেশের বিজয়কে তারা একধরনের “ইন্ডিয়ান হেজিমনি” প্রতিষ্ঠার উপকরণ বানাতে চাইছে। এনসিপি মনে করে, বিজয় দিবসকে ঘিরে বাংলাদেশের ভূমিকাকে আড়াল করে ভারতের একক বিজয়ের ন্যারেটিভ দাঁড় করানো বাংলাদেশের ওপর দীর্ঘদিনের আধিপত্যবাদী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ, এবং এর বিরুদ্ধে জাতীয়ভাবে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ ও করণীয় দাবি

প্রথম আলো, হিন্দুস্তান টাইমসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিক্রিয়ায় একাধিক নেতা বলেছেন, ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় মূলত বাঙালি জনগণের দীর্ঘ লড়াই ও আত্মত্যাগের ফল; ভারত গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল, কিন্তু বিজয়ের মালিক বাংলাদেশ। তাই বিজয় দিবসের বার্তায় বাংলাদেশকে উল্লেখ না করা এবং যুদ্ধকে শুধু ভারতের “historic victory” হিসেবে বর্ণনা করা ইতিহাস বিকৃতির শামিল বলে মন্তব্য করেন তারা। সমালোচকরা মোদির পোস্টের সংশোধন, স্পষ্ট ব্যাখ্যা ও দুঃখপ্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের প্রশ্নে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানেরই বাংলাদেশের ইতিহাস পুনর্লিখনের অধিকার নেই।

মোদির বার্তায় বাংলাদেশের বিজয় ও মুক্তিযুদ্ধকে আড়ালে রেখে কেবল ভারতের “historic victory” তুলে ধরা ঢাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। আইন উপদেষ্টা, এনসিপি, বিএনপি, জামায়াত ও বাম দলগুলোর কঠোর ভাষার নিন্দা ইঙ্গিত দিচ্ছে, দীর্ঘদিনের আস্থাহীনতা এখন উন্মুক্ত রাজনৈতিক বিরাগে রূপ নিচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে মানসিক ও কূটনৈতিক দূরত্ব আরও বেড়ে ভবিষ্যৎ সহযোগিতাও জটিল হয়ে উঠতে পারে।


লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।

১১৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন














সর্বশেষ সব খবর
মতামত নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন