গর্ত ২শ' ফুট গভীর, ৪৫ ফুটেও সন্ধান নেই শিশুর : ফায়ার সার্ভিস
বৃহস্পতিবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে এখনও নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে প্রতিবেদন লেখার সময়ও উদ্ধার অভিযান চলমান ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ডিরেক্টর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গর্তের ভেতরে প্রায় ৪৫ ফুট পর্যন্ত নামতে পারলেও শিশুটির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার ভাষায়, 'গর্তটি প্রায় ২০০ ফুট গভীর। এত গভীরে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করার মতো প্রযুক্তি বিশ্বে কোথাও নেই। উন্নত দেশেও এই গভীরতায় পৌঁছাতে ৭৫ থেকে ৭৮ ঘণ্টা সময় লাগে।'
তিনি আরও জানান, প্রথমে ৩৫ ফুট পর্যন্ত ক্যামেরা নামানো হলেও কিছু দেখা যায়নি। এখন ৪৫ ফুট পর্যন্ত আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে অনুসন্ধান চলছে। 'আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, পদ্ধতিগত কোনো ভুল নেই,' বলেন তিনি। সাজিদকে উদ্ধারে নতুন পরিকল্পনা সাজিয়ে একটানা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
এদিকে রাজশাহী বিভাগের উপপরিচালক মনজিল হক জানান, গর্তের কাছেই একটি পুকুর থাকায় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খনন কাজ করা হচ্ছে, যাতে পানি গর্তে ঢুকে পরিস্থিতি আরো জটিল না করে।
গতকাল রাত থেকেই তানোর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধারকাজে যুক্ত রয়েছে। গর্তে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে শিশুটিকে জীবিত রাখার জন্য। একইসঙ্গে গর্তের সমান্তরালে আরেকটি পথ তৈরি করতে বিকেল থেকে একটি এক্সকাভেটর ও দুটি ট্র্যাক্টর কাজ করছে।
ঘটনার সূত্রপাতে জানা যায়, বুধবার দুপুরে মাটি বোঝাই একটি ট্রলি হঠাৎ দেবে গেলে ঘটনাস্থলে ভিড় করে স্থানীয়রা। তখন রুনা খাতুন তার দুই বছরের ছেলে সাজিদকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। হাঁটার এক পর্যায়ে সাজিদ হঠাৎ চিৎকার করে পড়ে যায় গভীর গর্তে। কিছুক্ষণ পর নিচ থেকে মৃদু ‘মা, মা’ ডাক শুনতে পান রুনা।
স্থানীয়রা জানান, কোয়েলহাট গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কমে যাওয়ায় এক বাসিন্দা পানির গভীরতা পরীক্ষা করতে গর্তটি করেছিলেন। পরে গর্তটি ভরাট করা হলেও বৃষ্টির কারণে মাটি বসে গিয়ে পুরনো গর্তটি পুনরায় খুলে পড়ে।
তানোর থানার ওসি শাহিনুজ্জামান বলেন, 'উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সকলের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলছে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের জন্য।'
১১০ বার পড়া হয়েছে