সর্বশেষ

জাতীয়ঢাকায় আবারও ৩.৬ মাত্রার ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশাল
প্লট দুর্নীতি মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছর, জয়ের ৫ বছর এবং পুতুলের ৫ বছর কারাদণ্ড
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৭ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৫৬৭
সৌদি আরবসহ সাত দেশে প্রবাসীদের ভোট নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত
দুদকের সব কর্মকর্তার সম্পদের বিবরণ বাধ্যতামূলক: প্রেস সচিব
দেশজুড়ে ১৩৬ পুলিশ পরিদর্শকের বদলি
হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া
রাজধানীর মগবাজারে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সারাদেশঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে ১০ জন আহত, বাড়িঘর ভাংচুর
আন্তর্জাতিকহংকংয়ে আবাসিক কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫
পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজকারার ১৪ বছরের কারাদণ্ড
চীনে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ রেলশ্রমিকের মৃত্যু
মিয়ানমারে ৩ হাজার রাজবন্দি মুক্তি, ৫৫০০ জনের অভিযোগ প্রত্যাহার
হোয়াইট হাউসের কাছে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে গুলি
খেলাআইরিশদের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়, চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বড় হার
বিপিএল শুরু ১৯ ডিসেম্বর, ফাইনাল ১৬ জানুয়ারি
ফিচার

অগ্রণী ব্যাংকের লকারে ৮৩২ ভরি স্বর্ণ: অডিও বয়ানে শেখ হাসিনা, প্রশ্নের মুখে পারিবারিক গহনা

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

বৃহস্পতিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২:৪৭ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজধানীর দিলকুশায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে থাকা দুটি সেফটি লকার ভেঙে ৮৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।

দুদক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আদালতের অনুমোদন নিয়ে লকার দুটি খোলা হলে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের সন্ধান মেলে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোনা ও অলংকারের মালিকানা এবং বৈধতার বিষয়টি এখন তদন্তাধীন, যা শেখ হাসিনার পূর্ববর্তী আয়কর রিটার্ন ও নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুদকের প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় থাকা দুটি লকারের একটি শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে এবং অন্যটি শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার নামে খোলা হয়। এ সময় লকার দুটিতে মোট ৮৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়। লকারে সংরক্ষিত ছোট ছোট কাগজ ও বর্ণনার ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, উদ্ধারকৃত এই গহনার মালিকানার অংশ বিশেষ শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ, সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বলে। দুদক বলেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে মালিকানা নির্ধারণ এবং আয়–বহির্ভূত সম্পদের উপস্থিতি প্রমাণিত হলে আইনের অধীনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর মধ্যেই ২৭ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও বার্তা ছড়িয়ে পড়ে, যা শেখ হাসিনার কণ্ঠ বলে দাবি করা হচ্ছে। এতে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, পাকিস্তান আমল থেকেই ব্যাংকের লকারে তাদের পরিবারের গহনা রাখা ছিল এবং সেখানে তার নানী, দাদী, মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, এমনকি মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিয়ের গয়নাও রয়েছে। তিনি দাবি করেন, পারিবারিক গহনা নিরাপদ রাখার জন‍্য এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, অথচ এখন তার জীবিত অবস্থায়ই লকার ভেঙে সব নিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেখানে তার বিরুদ্ধে মামলা এখনো চুড়ান্ত ভাবে শেষ হয়নি। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, তাকে অযোগ্য ও ‘অবিশ্বস্ত’ দেখানোর অপচেষ্টা চলছে এবং তার সম্পদকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অডিও বার্তা প্রকাশের পর থেকেই গহনার উৎস ও উত্তরাধিকার নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা জানতে চাইছেন, শেখ হাসিনার নানীর সব গহনা এককভাবে কেমন করে তার কাছেই এলো, কিংবা কামাল ও জামালের স্ত্রীর গহনা–সহ পরিবারের সব নারী সদস্যের অলংকারের উত্তরাধিকার একযোগে শেখ হাসিনার নামে জমা থাকার ব্যাখ্যা কী। একই সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে, যদি এত বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উত্তরাধিকারসূত্রে বা পারিবারিক সম্পদ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে তার নিয়ন্ত্রণে থেকে থাকে, তবে সেগুলোর কত অংশ তার নির্বাচনী হলফনামা ও আয়কর রিটার্নে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা পূর্ববর্তী হলফনামা অনুযায়ী, শেখ হাসিনা সোনা ও মূল্যবান ধাতুর একটি আর্থিক মূল্য দেখালেও সেখানে সোনার নির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ নেই। এখন এনবিআর উদ্ধারকৃত ৮৩২ ভরি স্বর্ণের সঙ্গে সেই ঘোষণার সামঞ্জস্য যাচাই করছে।

ঘটনাটি রাজনীতিতেও বিভক্ত প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। সরকার–ঘনিষ্ঠ সূত্র এবং অনুসন্ধানী সংস্থাগুলো বলছে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নথিভুক্ত প্রক্রিয়ায় লকার ভেঙে স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে এবং এর বৈধতা যাচাই এখন আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ মাত্র। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ–সমর্থিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–পেজে দাবি তোলা হয়েছে, উদ্ধারকৃত গয়নার সবটাই নাকি ‘পারিবারিক উত্তরাধিকার’ কিংবা ‘আবেগঘন স্মৃতি’, আবার কোথাও কোথাও প্রচার করা হচ্ছে—এসব সোনা নয়, পিতল; পুরো ঘটনাই নাকি বর্তমান সরকারের ‘সাজানো নাটক’। তবে দুদক বা এনবিআরের কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে ‘পিতল’ বা ‘সোনা নয়’ ধরনের দাবি নেই; সব সংস্থাই এগুলোকে স্বর্ণালঙ্কার হিসেবে উল্লেখ করে কেবল মালিকানা ও বৈধতার প্রশ্নে তদন্তের কথা বলছে।

এখন সমগ্র বিতর্ক ঘুরপাক খাচ্ছে তিনটি অক্ষে—অগ্রণী ব্যাংকের লকারে উদ্ধার হওয়া ৮৩২ ভরি সোনার আইনগত বৈধতা, শেখ হাসিনার অডিও বয়ানে উত্থাপিত পারিবারিক গহনার উত্তরাধিকার–বর্ণনা এবং নির্বাচনী হলফনামা ও কর–বিবরণীর সঙ্গে এই স্বর্ণের হিসাবের সামঞ্জস্য। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গহনার মালিকানা ও উৎস নিয়ে চূড়ান্ত রায় না এলেও, অগ্রণী ব্যাংকের এই লকার–বিতর্ক ইতিমধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও জনমনে নতুন এক আলোচনার ঝড় তুলেছে।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট

১২২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন














সর্বশেষ সব খবর
ফিচার নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন