সর্বশেষ

সারাদেশ

থানচিতে চার বছরেও চালু নয় পানি প্রকল্প, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

 মো. আরিফ, বান্দরবান
 মো. আরিফ, বান্দরবান

শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ৬:১৭ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় চার বছর আগে শুরু হওয়া পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে।

ভূমি-সংক্রান্ত জটিলতায় স্থবির হয়ে পড়া এ প্রকল্পের কারণে শুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। দ্রুত প্রকল্পটি চালুর দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

২০২১ সালে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি উপজেলা সদরকে নিরাপদ পানির আওতায় আনতে প্রকল্পটি হাতে নেয় পাউবো। মি. ইউ টি মং প্রতিষ্ঠানের অধীনে ঠিকাদার আবুল কালাম সেন্টু ও চিংথোয়াই মারমা কাজ শুরু করলেও প্রাথমিক অগ্রগতির পরই ভূমি বিরোধসহ নানা জটিলতায় প্রকল্পের কাজ থমকে যায়।

প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় এখনো ঝিরি, পাহাড়ি ঝর্ণা ও কূপের পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়রা। এসব অনিরাপদ উৎসের পানি পান করায় নারীদের পাশাপাশি শিশুরাও নিয়মিত পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে ঝিরি ও ঝর্ণার পানি কমে গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।

বান্দরবান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের টি অ্যান্ড টি পাড়ার বাসিন্দারা জানান, বছরের পর বছর পানির সংকটে ভুগতে হচ্ছে তাদের। বর্ষায় পাহাড়ি পথে ঝর্ণা থেকে পানি আনা হয় অত্যন্ত কষ্টকর। পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত পানি হাউস প্রথমে আশার সঞ্চার করলেও এখনো তা চালু না হওয়ায় হতাশা বাড়ছে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “বর্ষায় ঘরের পাশের ঝিরিতে কিছু পানি থাকলেও মৌসুম শেষে সেটিও শুকিয়ে যায়। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে পানি আনার কাজ শুরু করতে হয়—এটা এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।”

টি অ্যান্ড টি পাড়ার কারবারি জানান, “আমাদের প্রধান সমস্যা পানি। অন্যান্য সুবিধা নিয়ে তেমন অভিযোগ নেই। শুধু একটি সরকারি পানি প্রকল্প চালু হলেই আমাদের বড় কষ্ট দূর হবে।”

দূরবর্তী এলাকার মানুষও একই অভিযোগ করেন। তাদের একমাত্র ভরসা নদী ও ঝিরি, যা শুষ্ক মৌসুমে প্রায় শুকিয়ে যায়। অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজের অভিযোগে অনেক টিউবওয়েল, রিংওয়েল ও জিএফএস প্রকল্প মৌসুম শুরুর আগেই অকেজো হয়ে পড়ে।

প্রকল্প বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে জানান, ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যার কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি আটকে আছে। বিষয়টি সমাধান হলে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে পানি সরবরাহ চালু করা হবে।

স্থানীয়দের প্রত্যাশা, প্রকল্পটি চালু হলে থানচি উপজেলা সদরের প্রায় এক হাজার পরিবার প্রতিদিন নিরাপদ পানি পাবে, যা এই দুর্গম এলাকার দীর্ঘদিনের ভোগান্তি অনেকটাই কমিয়ে দেবে।

১০৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন