দৌলতপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ
সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫ ৯:১৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুস্থ, অসহায়, গরিব, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, সদস্য আমজাদ হোসেন উপকারভোগীদের নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে তার শ্বশুর ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নাম্বারে ভাতার টাকা তোলেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ধর্মদহ গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগী সুলতান হোসেন জানান, দেড় বছর আগে তার মোবাইলে একবার ভাতার টাকা এসেছিল। এরপর থেকে তিনি আর কোনো অর্থ পাননি। অভিযোগ জানাতে গেলে আমজাদ মেম্বর তাকে আশ্বাস দিয়ে বিদায় করতেন। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরামর্শে সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তার নামে বরাদ্দ টাকা অন্য নম্বারে পাঠানো হয়েছে, যা পরে আমজাদ মেম্বারের শ্বশুর বগুড়ার বজলুর রহমানের ব্যবহৃত বলে নিশ্চিত হন।
অভিযোগ পেয়ে বিএনপির ১১ নম্বর আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের কাছে একাধিক ভুক্তভোগী ছুটে যান। শহিদুল ইসলামের দাবি, 'কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ জন উপকারভোগীর ভাতার টাকা গায়েব করেছে আমজাদ মেম্বর। তদন্ত সাপেক্ষে তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।'
একই গ্রামের বিধবা সুরাতন নেছা অভিযোগ করে বলেন, 'দেড় বছর আগে একবার ভাতা পেয়েছিলাম, সেটাও মেম্বর নিয়ে নেয়। পরে সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েও কিছুই দেয়নি।'
আরেক ভুক্তভোগী মাসিকুল ইসলাম জানান, তার প্রতিবন্ধী ছেলে সুফিয়ান ৬ মাসের ভাতা পেলেও গত ৯ মাসের টাকা পাননি। সমাজসেবা অফিসে গেলে জানতে পারেন, টাকাগুলো অন্য নাম্বারে যাচ্ছে। পরে আমজাদ মেম্বর রাতের আঁধারে তার বাড়িতে গিয়ে ৭,৭০০ টাকা ফেরত দেন বলে দাবি করেন মাসিকুল।
এছাড়া প্রসূতি ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে স্থানীয় আঃ ছাত্তারের কাছ থেকে দেড় বছর আগে ৬ হাজার টাকা নেন আমজাদ মেম্বর, কিন্তু আজও সে কার্ড বা টাকা ফেরত দেননি।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেন নিজেই স্বীকার করেছেন যে, 'প্রায় ১০ জনের মতো উপকারভোগীর টাকার লেনদেনে ভুল করেছি।'
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি বলেন, 'গরীবের ভাতার টাকা আত্মসাৎ করার কোনো সুযোগ নেই। প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. জহিরুল ইসলাম ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা অভিযোগ পেয়েছি যে আমজাদ হোসেন বিভিন্ন উপকারভোগীর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে আত্মীয়দের নম্বর ব্যবহার করে টাকা তোলার ব্যবস্থা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
২২৪ বার পড়া হয়েছে