শৈলকুপায় জমি রেজিস্ট্রি ছাড়াই ক্রেতাকে হুমকি, নিরাপত্তাহীনতায় অনেকে
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর গ্রামে জমি ক্রয় করে রেজিস্ট্রি না পেয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক হিন্দু পরিবার।
উল্টো মামলা তুলে নিতে ক্রেতাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বিক্রেতা শামিমুল ইসলাম। এ ঘটনায় ক্রেতা আশিক কুমার শৈলকুপা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং–১১৮৩, তাং–২৪/১০/২৫) করেছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাটফাজিলপুর গ্রামের মৃত সুদির সরদারের পুত্র গনেশ সরদার ১১ বছর আগে একই গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে শামিমুল ইসলামের কাছ থেকে আর এস ২৯৯১ দাগের ৮৭৫ নং খতিয়ানের তিন শতক জমি ক্রয় করেন। জমিটির দাম নির্ধারণ হয় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
২০১৪ সালের ৩ মে বায়না হিসেবে ১৯ হাজার টাকা গ্রহণ করেন বিক্রেতা শামিমুল ইসলাম। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন কিস্তিতে মোট ৫১ হাজার টাকা গ্রহণের পর গনেশ সরদারকে জমির দখল বুঝিয়ে দেন তিনি। তবে দীর্ঘদিনেও রেজিস্ট্রি সম্পন্ন না করায় ক্রেতা পক্ষ বারবার বিক্রেতার দ্বারস্থ হন।
এর মধ্যে গত বছর বিক্রেতা শামিম অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। ক্রেতা গনেশ সরদার ১৬ হাজার টাকায় রাজি হয়ে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল মোট ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা প্রদান করেন। টাকার সম্পূর্ণ পরিমাণ বুঝে নেওয়ার পরও বিক্রেতা জমি রেজিস্ট্রি না করে উল্টো ক্রেতাকে ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১৩ মে গনেশ সরদার ও স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এর পর থেকেই বিক্রেতা শামিমুল ইসলাম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার।
গনেশ সরদারের ছেলে আশিক কুমার জানান, “আমরা একটি অসহায় হিন্দু পরিবার। ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার পরও শামিমুল ইসলাম জমি রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছেন না। উল্টো মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি আমাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ারও ভয় দেখাচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “এর আগে শামিম আমাদের মারধর করায় মামলা করেছিলাম (মামলা নং–শৈল সিআর ৩০০/২৪)। সেই মামলা তুলে নিতে এখন প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে আমাদের পক্ষেই প্রতিবেদন দিয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শামিমুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগেও হেফাজতে ইসলাম কর্মী হত্যা মামলা ও এক সাংবাদিককে মারধরের মামলা রয়েছে।
বর্তমানে গনেশ সরদার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত জমি রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
১৩১ বার পড়া হয়েছে