যুদ্ধবিরতির পর গাজায় কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় হামাস, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩৩

বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ৫:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজায় দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
নিরাপত্তা খাতে শূন্যতা এড়াতে এবং বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে দমন করতে গোষ্ঠীটি কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে, হামাস কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে অন্তত ৩৩ জনের, বলে জানিয়েছেন গাজা ভিত্তিক নিরাপত্তা সূত্র।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আলোচিত হামলার পর ইসরায়েলি অভিযানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় হামাস। তবে সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির সুযোগে তারা ধীরে ধীরে নিজেদের সদস্যদের গাজার রাস্তায় ফিরিয়ে আনছে। রয়টার্স জানিয়েছে, গাজার দুটি নিরাপত্তা সূত্র বলছে—বর্তমান পরিস্থিতি অনিশ্চিত থাকায় হামাস খুবই সতর্কভাবে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে।
গাজা সিটির এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, যেসব গোষ্ঠী চলমান যুদ্ধে হামাসের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছিল, তাদের ওপরই মূলত এই দমন অভিযান চালানো হচ্ছে। সংঘর্ষে হামাসেরও ছয়জন সদস্য নিহত হয়েছে। যদিও নিহতদের পরিচয় বা তারা ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল কি না—তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে, হামাস-বিরোধী নেতা ইয়াসের আবু শাবাব ও তার ঘনিষ্ঠদের লক্ষ্য করে দক্ষিণ গাজার রাফাহ অঞ্চলেও অভিযান চালানো হচ্ছে। জানা গেছে, আবু শাবাবের ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত একজন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন। হামাস তাকে ‘ইসরায়েলের সহযোগী’ হিসেবে আখ্যা দিলেও তিনি সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সোমবার গাজায় ধারণকৃত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশধারী বন্দুকধারীরা সাতজন লোককে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করছে। নিহতদের ‘সহযোগী’ বলে উপস্থিত জনতা উল্লাস করে। হামাস-সদস্যদের মতো সবুজ ফিতা পরা বন্দুকধারীদের উপস্থিতি থাকলেও ভিডিওর সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
উল্লেখ্য, গত মাসেও হামাস তিনজনকে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছিল।
সোমবার হামাস ইসরায়েলের কাছে আটক থাকা শেষ জীবিত কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেয়। এ সময় গাজার রাস্তায় কাসাম ব্রিগেডের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়, যা যুদ্ধবিরতির মাঝেও উত্তেজনা এবং অনিশ্চয়তার বার্তা দেয়।
হামাসের গাজা সরকারের মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতা জানান, গোষ্ঠীটি গাজায় কোনো নিরাপত্তা শূন্যতা সৃষ্টি হতে দেবে না এবং জননিরাপত্তা ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, গাজায় ভবিষ্যৎ শাসন কাঠামো নির্ধারণে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সমঝোতা হওয়া উচিত, যাতে বিদেশি কোনো হস্তক্ষেপ না থাকে।
ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক রেহাম ওউদার মতে, হামাসের এসব পদক্ষেপ মূলত বিরোধীদের ভয় দেখানো এবং তাদের নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীকে ভবিষ্যতের যেকোনো সরকারে জায়গা করে দেওয়ার কৌশল। তবে ইসরায়েল এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।
১০৮ বার পড়া হয়েছে