খাগড়াছড়িতে ছাত্র-জনতার অবরোধ, সাজেকে আটকা হাজারের বেশি পর্যটক

শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
খাগড়াছড়িতে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ডাকে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ শুরু হয়েছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধের ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
হঠাৎ করে এই অবরোধের ডাক দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। সাজেক ভ্যালিতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
সাজেক রুটের পরিবহন কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফ জানান, “শুক্রবার অন্তত ২০০টির বেশি গাড়ি সাজেকে গেছে। এতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক রয়েছেন। শনিবারও খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকগামী কিছু গাড়ি প্রস্তুত ছিল, তবে প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় সেগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়নি।”
অবরোধকারীরা খাগড়াছড়ি-ঢাকা ও খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়াও পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি প্রভৃতি সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এবং গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছেন। অনেক জায়গায় গাছ কেটে সরাসরি সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি শহরের বলপাইয়া আদাম এলাকায় অন্তত ছয়-সাতটি গাড়ি আটকে আছে বলে জানা গেছে। অনেক যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই শহরে প্রবেশ করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচগুলোও জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে আটকে পড়েছে।
নোয়াখালী থেকে আসা পর্যটক মো. ফারুক বলেন, “বন্ধুদের নিয়ে সাজেকে যাওয়ার পরিকল্পনায় খাগড়াছড়ি এসেছি। এখানে এসে অবরোধের কথা জানতে পারি। এখন আমরা এখানেই আটকে আছি, সামনের পরিস্থিতি কী হবে বুঝতে পারছি না।”
গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসা মো. সোলাইমান বলেন, “ছোট ছেলেমেয়েকে নিয়ে রাস্তায় আছি। গাড়ি না ছাড়লে হোটেলে উঠব, না বাড়ি ফিরব—এই দোটানায় পড়েছি।”
তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, “জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার পথে এক কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা সদর থানায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে আটক করে পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে।
১১৯ বার পড়া হয়েছে