সর্বশেষ

রাজনীতি

ডাকসু নির্বাচন : ১১টি অনিয়মের অভিযোগ ছাত্রদলের

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৯:৪২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে অনিয়ম ও অসঙ্গতির ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলেছে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল।

প্যানেলটির সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত ও স্বচ্ছ ব্যাখ্যা না দিলে তারা এই নির্বাচনকে ‘বৈধ’ বলে মেনে নেবেন না।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগগুলো উপস্থাপন করেন। এতে প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানভীর বারী হামিম এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদসহ অন্যান্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

আবিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা বারবার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনিয়ম সম্পর্কে প্রশাসনকে অবহিত করেছি। কিন্তু তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কালক্ষেপণ করছে। এভাবে চলতে থাকলে এবারের ডাকসু নির্বাচন ইতিহাসে প্রশ্নবিদ্ধ এক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে।”

অভিযোগের তালিকায় যা রয়েছে:
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল যে ১১টি অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগ এনেছে, তার মধ্যে রয়েছে—

১. ভোটার অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ভোট দেওয়া ও জালিয়াতি: ভোটার তালিকায় আগেভাগেই স্বাক্ষর দিয়ে রাখা, নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে চিহ্নিত ব্যালট সরবরাহের মতো অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে ভোটকেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হলেও প্রশাসন তা এখনও সরবরাহ করেনি।
২. ব্যালট পেপারে স্বচ্ছতা না থাকা: নির্বাচনে ব্যবহৃত ব্যালট পেপারে কোনো ক্রমিক নম্বর ছিল না। ব্যবহৃত, বাতিল এবং অব্যবহৃত ব্যালটের সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়নি।
৩. অবৈধভাবে ছাপানো ব্যালট: ভোটের দুই দিন আগে নীলক্ষেতের একটি ছাপাখানায় বিপুল পরিমাণ ব্যালট পেপার পাওয়া গেলেও সে বিষয়ে তদন্ত বা ব্যাখ্যা দেয়নি প্রশাসন।
৪. ভোট গণনায় স্বচ্ছতা না থাকা: গণনার সময় কোনো কার্যকর প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, যার ফলে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
৫. পোলিং এজেন্ট বাদ দেওয়া: ভোটের আগের রাতে প্রার্থীদের মনোনীত পোলিং এজেন্টদের বাদ দেওয়া হয়। কোন প্রক্রিয়ায় এজেন্ট বাছাই করা হয়েছে, সে তথ্য জানানো হয়নি।
৬. আইডি কার্ড না দেওয়া: পোলিং এজেন্টদের আইডি কার্ড যথাসময়ে না দেওয়ায় অনেকেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি। এতে পক্ষপাতদুষ্ট পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
৭. ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা গোপন রাখা: নির্বাচনের দিনই প্রার্থীদের জানানো হয় ৮টি কেন্দ্রের বদলে ১৮টি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। ফলে পোলিং এজেন্ট নিয়োগে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
৮. পোলিং অফিসার নিয়োগে অনিয়ম: নিরপেক্ষ থাকার কথা থাকলেও বেশ কিছু পোলিং অফিসার পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেন।
৯. বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ: ভোটের দিন কিছু রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও বিএনসিসি সদস্যের সহায়তায় একটি গোষ্ঠীকে ক্যাম্পাসে অবাধে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। বহিরাগত শিবিরকর্মীদের হাতেনাতে ধরে প্রশাসনের কাছে সোপর্দও করা হয়।
১০. ভোট গণনায় এজেন্টদের অবরুদ্ধ রাখা: গণনার সময় পোলিং এজেন্টদের নিষ্ক্রিয় রাখা হয় এবং গণনায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি, ফলে অনেকেই রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর না করেই ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন।
১১. ব্যালট পেপারে বলপেন ব্যবহারে ভোট বাতিল: দুপুরের পর থেকে অধিকাংশ কেন্দ্রে মার্কার না থাকায় ভোটাররা বলপেন ব্যবহার করতে বাধ্য হন। এতে ওএমআর মেশিনে অনেক ভোট গণনায় আসেনি বলে দাবি করা হয়েছে। এছাড়াও আঙুলের কালিও সহজে মুছে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন তারা।

 

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের দাবি, প্রশাসন যদি এই অনিয়মগুলো তদন্ত না করে এবং তাদের অবস্থান পরিষ্কার না করে, তাহলে এই নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

তারা আশা প্রকাশ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার পথে ফিরে এসে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করবে।

১১৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
রাজনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন