স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পে চতুর্থবারের মতো সময় বাড়ানোর প্রস্তাব

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাণাধীন স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের বাস্তবায়নে ধীরগতি ও একের পর এক মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে বাড়ছে ব্যয়, কমছে সুফল।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি ২০১৯ সালের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় সময় গড়িয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। তবে এত সময় নিয়েও কাজ শেষ না হওয়ায় চতুর্থবারের মতো আবারও এক বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
তবে এবারে ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানোর শর্তে ৯টি সুপারিশ দিয়েছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।
প্রকল্পটি শুরুতে অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। তবে পরবর্তীতে প্রথম সংশোধনে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয় ৩৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২৫৬ কোটি টাকা, যা আর্থিক অগ্রগতিতে ৭৫ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতিতে ৯০ শতাংশ।
আইএমইডির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হালিমুজ্জামান তরফদার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পর এক প্রতিবেদন দেন। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মেয়াদ বাড়াতে হলে যে ৯টি শর্ত মানতে হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
স্বাধীনতা জাদুঘরের অডিটরিয়াম, ওয়াটার বডি, গ্লাস টাওয়ারে লাইটিংসহ বিভিন্ন অসমাপ্ত স্থাপনা সংস্কার ও উন্নয়ন।
৭ মার্চের ভাষণ এবং ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক স্থানে মার্বেল স্মৃতিফলক স্থাপন।
আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিংসহ অবকাঠামোগত অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করা।
শাহবাগ থানা নির্মাণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ডিপিপি তৈরি ও কার্যক্রম গ্রহণ।
প্রতি তিন মাস অন্তর অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়া।
২০২২-২৩ অর্থবছরের অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিসহ পরবর্তী দুই অর্থবছরের অডিট শেষ করা।
প্রকল্প তথ্য নিয়মিত ই-পিআইএমএস সফটওয়্যারে হালনাগাদ।
প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বাকি সভাগুলো নিয়মমাফিক শেষ করা।
সুপারিশ অনুযায়ী গৃহীত পদক্ষেপ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জানানো।
আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, "প্রকল্প প্রণয়নের সময় সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই পরে জটিলতা দেখা দেয়। স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পও এর ব্যতিক্রম নয়। শেষ সময়ে এসে কেন নতুন কার্যক্রম যোগ করতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।"
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ডিপিপিতে শাহবাগ থানার ভবনের জন্য বরাদ্দ থাকলেও স্থান নির্ধারণ না হওয়ায় কাজ শুরু করা যায়নি। এছাড়া নির্মাণাধীন অন্যান্য কাজের মাঝে কিছু নতুন কাজ সংযুক্ত হওয়ায় সময়মতো প্রকল্প শেষ করা সম্ভব হয়নি।
সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিকল্পনার ঘাটতি ও কাজের বারবার সংশোধন বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চতুর্থবারের মতো মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে আইএমইডি কঠোর অবস্থানে থাকলেও, সব শর্ত পূরণ হলে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় আসবে।
১২৩ বার পড়া হয়েছে