রাখাইনে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৮

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:৫৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে সেনাবাহিনীর চালানো বিমান হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুলশিক্ষার্থী। স্থানীয় একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং গণমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঘটনার বিবরণ
শুক্রবার রাতে কিয়াউকতাও শহরের নিকটবর্তী থায়েট থাপিন গ্রামে হামলাটি চালানো হয়। ওই গ্রামের দুটি বেসরকারি স্কুল—পাইনিয়ার পান খিন এবং আ মাইন থিট হাই স্কুল—এর ওপর একটি জেট ফাইটার থেকে দুটি বোমা ফেলা হয় বলে জানিয়েছেন আরাকান আর্মি (এএ)-এর মুখপাত্র খাইং থুখা।
তিনি জানান, নিহতদের অধিকাংশই ১৭ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী, যারা ওই দুটি স্কুলে পড়াশোনা করত।
সত্যতা যাচাইয়ের প্রতিবন্ধকতা
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই ইন্টারনেট এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ থাকায় স্বাধীনভাবে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
আরাকান আর্মির প্রতিক্রিয়া
টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি জানিয়েছে, "নিরীহ শিক্ষার্থীদের মৃত্যুতে আমরা নিহতদের পরিবারের মতোই শোকাহত।" সংগঠনটি এই হামলার জন্য সরাসরি মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে।
প্রেক্ষাপট ও পটভূমি
আরাকান আর্মি হচ্ছে রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর একটি সশস্ত্র সংগঠন, যারা মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে তারা রাখাইনে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করে এবং ইতিমধ্যে অঞ্চলটির ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এ ছাড়া কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক সেনা সদর দপ্তরও তারা দখলে নিয়েছে।
কিয়াউকতাও শহর, যা মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সেটিও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এএ-এর দখলে যায়।
মিয়ানমারের সাম্প্রতিক অস্থিরতা
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়। এরপর থেকে সেনাবাহিনীর সহিংস দমননীতির কারণে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
বেসরকারি সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৭,২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
১০৪ বার পড়া হয়েছে