কুষ্টিয়া-৪ আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ: বিএনপি-জামায়াতের মনোনয়ন ভাবনা

বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫ ১:১৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে এবার ভোটের আমেজে ভেসে উঠেছে নানা চমক। দীর্ঘদিন ধরে এই আসনটি ছিল বিএনপি ও জামায়াতের শক্ত ঘাঁটি। তবে আওয়ামী লীগ বারবার প্রার্থী পরিবর্তন করলেও, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে চলমান কোন্দল এবং বিভাজন এই নির্বাচনী লড়াইয়ে প্রভাব ফেলছে।
এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং গোষ্ঠীগত কোন্দল তুঙ্গে। দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন, মনোনয়ন প্রক্রিয়া ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা নির্বাচনের মাঠেও প্রত্যক্ষভাবে পড়েছে। বিএনপির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে গ্রুপিং, যা দলের কার্যক্রমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলীয় নেতা নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক কোন্দল চললেও, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি নেতাদের প্রত্যাশা রয়েছে শক্তিশালী মনোনয়ন পাওয়ার।
অপরদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আফজাল হোসাইন ইতিমধ্যেই মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তার গণসংযোগ, সামাজিক কর্মকাণ্ড ও জনসংখ্যার মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা এই আসনে তার শক্তিশালী অবস্থান নির্দেশ করছে। অনেক ভোটার মনে করছেন, গ্রুপিং ও কোন্দলের কারণে বিএনপি এক না হলে জামায়াতের বিজয় সহজ হতে পারে।
এছাড়া, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিসসহ অন্যান্য দলগুলোও নিয়মিত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, এই নির্বাচনে মূল লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। দুই উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ। এর মধ্যে কুমারখালীতে ভোটার সংখ্যা দেড় লাখের কিছু বেশি।
আসনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিএনপির দুই প্রবীণ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ও কুমারখালী থানা বিএনপির আহবায়ক নুরুল ইসলাম আনছার প্রামাণিকের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব থাকলেও, নির্বাচন সামনে রেখে তারা আলাদা মনোভাব দেখাচ্ছেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বিএনপির হাইকমান্ডের কাছের নেতাদের মধ্যে অন্যতম ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শেখ সাদী নতুন করে গনসংযোগ চালাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ এই আসনে মনোনয়নপ্রার্থী পরিবর্তনে ব্যস্ত থাকলেও, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় সবাই। তবে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের কারণে এই আসনে ফলাফল কেমন হবে, তা এখনও অজানা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী আফজাল হোসাইনের জনপ্রিয়তা ও সামাজিক কর্মকাণ্ড ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, বিএনপির মধ্যে মনোনয়ন ও গোষ্ঠীগত কোন্দল থাকায় তাদের জন্য সফলতা অর্জন কঠিন হতে পারে বলে ধারণা।
এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ফজলে নূর ডিকো, ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খ্যাত গনঅধিকার পরিষদের শাকিল আহমেদ তিয়াস, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আনোয়ার খানও গনসংযোগ করছেন নিয়মিত।
বিগত দিনের নির্বাচনী ফলাফলের পটভূমিতে দেখা যায়, কুমারখালীতে শক্ত অবস্থানে রয়েছে ইসলামী দলগুলো। তিনটি ইউপি চেয়ারম্যান ও দুইটি ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় এর প্রমাণ মেলে। তবে, এই আসনে মূল লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ও স্থানীয় নেতাদের ব্যক্তিগত অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
১৭৭ বার পড়া হয়েছে