সর্বশেষ

জাতীয়

আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের উত্তরসূরি থেকে সমাজ উন্নয়নের অগ্রদূত

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫ ৪:৪১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রাজধানী ঢাকার নিউ টাউন সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে "প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক" পদে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন খাজা মাসুম বিল্লাহ কাওছারী।

আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের উত্তরসূরি এই সমাজসেবককে অনেকেই আধুনিক সমাজ-উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করছেন। সামাজিক মহাসংকট ও হানাহানির মধ্যে দ্বিধা বিভক্তিহীন সমাজ বিনির্মাণে তার দূরদর্শী কৌশল ও চিন্তাকে সাদরে গ্রহণ করছে রাজধানী ঢাকার নিউ টাউন সোসাইটি বাসী এক যুগান্তকারী ভূমিকা হিসেবে।


১৯৭৮ সালের এক শুভ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে খাজা মাসুম বিল্লাহ কাওছারী জন্মগ্রহণ করেন এক ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারে। তিনি খান বাহাদুর নবাব খাজা আহসান উল্লাহর যোগ্য উত্তরসূরী এবং আধ্যাত্বিক সুফি সাধক খাজা ফয়েজ উদ্দিন (রহ.) ও খাজা নাছের আলী (রহ.)-এর সুযোগ্য বংশধর। তাঁর পিতা আবুল খায়ের মোহাম্মদ ইসমাইল ছাহেব একজন খ্যাতিমান আলেমে দ্বীন, কোরআন-হাদিসের বিজ্ঞ পণ্ডিত ও দায়ী ইলাল্লাহ, আর মাতা মোছাম্মৎ মালেকা বেগম দ্বীনদার, পর্দানশীল ও খোদাভীরু একজন আধ্যাত্মিক ক্ষমতাবান নারী।

শৈশব থেকেই খাজা কাওছারী বেড়ে উঠেছেন আধ্যাত্মিক আবহে, যেখানে অলৌকিকতা, ধর্মীয় পরিবেশ ও সুফিবাদের প্রভাব গভীরভাবে বিদ্যমান ছিল। তিনি ছারছীনা দরবার শরীফের পীর শাহসুফি আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহ.) এবং পাঙ্গাসিয়া দরবার শরীফের পীর শাহসুফি হযরত মাওলানা আমিন ছাহেব (রহ.)-এর সান্নিধ্য লাভ করে শৈশব থেকেই আধ্যাত্মিকতার স্বাদ গ্রহণ করেন।

পিতৃকুল ও মাতৃকুল উভয় দিক থেকেই ধর্মীয় ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ পরিবারে জন্ম নেওয়ায় কৈশোর থেকেই তিনি বিভেদহীন ও সংঘাতমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আত্মনিয়োগ করেন। পারিবারিক ধারাবাহিকতায় দ্বন্দ্ব-সংঘাত এড়িয়ে দল-মত-পথের ঊর্ধ্বে উঠে সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার স্বপ্নকেই জীবনের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন।

ছোটবেলা থেকেই সংগঠন গঠনে অনুপ্রাণিত হয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেন "সমাজকল্যাণ সমিতি ও ইসলামী পাঠাগার"। এর মাধ্যমে তাঁর আদর্শিক চিন্তা ও সামাজিক স্বপ্ন বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে। পরবর্তী সময়ে তিনি লেখালেখি ও সাংবাদিকতার জগতে প্রবেশ করেন। জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। দক্ষিণাঞ্চলের সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রাখতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন “সৈকত সাহিত্যসেবা পরিষদ” এবং ১৯৯৮ সালে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত বিএম কলেজে অধ্যয়নকালে প্রতিষ্ঠা ও সম্পাদনা করেন ত্রৈমাসিক সাহিত্যপত্রিকা “চিরহরিৎ”।

শিক্ষাজীবনে খাজা কাওছারী কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিওলজি বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন কৃতিত্বের সঙ্গে (ফার্স্ট ক্লাস, চতুর্থ স্থান)। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার খ্যাতনামা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে EPDC কোর্স সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি শুধু পড়াশোনায় নয়, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক, “বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোট”-এর প্রেসিডেন্ট, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার ও ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশন এবং আঞ্চলিক ছাত্রসমিতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

শিক্ষা সমাপনান্তে তিনি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক-এ এসিস্ট্যান্ট গবেষক হিসেবে যোগ দেন। তিন বছর সাফল্যের সঙ্গে কাজ করার পর যোগ দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গ্লোবাল হেলথ (BIGH), জেমস পি. গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এবং মিডওয়াইফারি ও নার্সিং বিভাগে। সেখানে শিক্ষা, গবেষণা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে তিনি বিভিন্ন নেতৃত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালে চাকরির পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আর্থ-সামাজিক ও গবেষণা সংস্থা সিডরো (SEDRO), যেখানে তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। একই সঙ্গে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত দৈনিক “কালের কথা”- পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।

খাজা কাওছারী ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন “দক্ষিণবঙ্গ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা”, যার তিনি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩০ মে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করা “রক্তিম বন্ধন বহুমুখী ফাউন্ডেশন”-এরও তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ২০২১ সালে দেশের আবাসন শিল্পে অবদান রাখতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন "এলিগ্যান্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি, যার বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর তিনি নিজেই। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত সামাজিক ও সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক আবাসিক সংগঠন “নিউ টাউন সোসাইটি”-এর অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবেও তিনি ভূমিকা রেখেচলছেন।


সাংবাদিকতা ও গবেষণার পাশাপাশি খাজা কাওছারী জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিতভাবে জাতীয় ইস্যু, সামাজিক সমস্যা, শিক্ষা, নীতি ও নৈতিকতার গুরুত্ব নিয়ে কলাম ও গবেষণামূলক নিবন্ধ লিখে আসছেন। একই সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা “লাইট হাউজ”-এর সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ধর্মীয় আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য, শিক্ষা, সাহিত্য, গবেষণা, উন্নয়ন ও সমাজসেবার এক উজ্জ্বল সম্মিলনে খাজা মাসুম বিল্লাহ কাওছারী আজ এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি ঐক্যবদ্ধ সমাজ ও মানবকল্যাণের সাধনা নিয়ে অবিরাম কাজ করে চলছেন। তার কর্মই তাকে ক্রমাগত ভাবে সামাজিক মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত করছে। এলাকাবাসীর বিশ্বাস, তাঁর অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব সমাজ ও সোসাইটিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
 

১৫৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন