ইলিশের ভরা মৌসুমেও পদ্মায় নেই সেই রূপালি জোয়ার

বৃহস্পতিবার , ২১ আগস্ট, ২০২৫ ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেই রূপালি সম্পদের।
দিনরাত পরিশ্রম করেও খালি হাতে ফিরছেন জেলেরা। কেউ কেউ কয়েকটি ছোট আকারের ইলিশ পেলেও তা বিক্রি করে জ্বালানি তেলের খরচও ওঠে না বলে অভিযোগ তাদের।
জেলেরা বলছেন, মেঘনা নদী ও উপকূলীয় এলাকায় ইলিশের প্রাচুর্য থাকলেও পদ্মায় মাছের আনাগোনা কম। ফলে ইলিশ ধরার জন্য নদীতে নেমে পড়লেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য মিলছে না।
সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে জানা যায়, দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া, ঢেউখালী, আকোটের চর ও চর নাসিরপুর এলাকার অন্তত সাত হাজার মানুষ ইলিশ শিকারে জড়িত। এর মধ্যে মাত্র সাড়ে ছয়শ' জেলে সরকারি কার্ডধারী।
স্থানীয় একজন জেলে জানান, "গত কয়েকদিন বৃষ্টি, ভিজা কাপড়, কষ্ট—সব কিছু সহ্য করেও নদীতে যাচ্ছি। কিন্তু জালে ইলিশ নেই বললেই চলে। পুরো দল মিলে যেসব মাছ ধরি, তা বিক্রি করে তেলের খরচও উঠছে না।"
আরেক জেলে জানান, "টানা দশ দিন ধরে পদ্মায় জাল ফেলেও আশানুরূপ ইলিশ পাননি তিনি। দু’একটা ছোট ইলিশ পাওয়া গেলেও বাজারে তেমন দাম নেই। যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে হয়তো পেশা পরিবর্তন করতে হবে।"
এদিকে বাজারেও ইলিশের সরবরাহ কম। ফলে দাম আকাশছোঁয়া। পিয়াজখালী বাজারের এক ইলিশ ব্যবসায়ী জানান, "এখন এক কেজি ওজনের পদ্মার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩-৪ হাজার টাকায়। ছোট সাইজের ইলিশও ১-২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।"
ইলিশ কিনতে কালিখোলা বাজারে আসা এক ক্রেতা আশিক মোল্লা বলেন, "ইলিশের আকার ছোট, কিন্তু দাম অনেক বেশি। যদি পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকতো, তাহলে কম দামে কিনতে পারতাম।"
সদরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, "নদীতে পানি বাড়লে ইলিশের চলাচলে প্রভাব পড়ে। গত পনের দিন মেঘনাতে বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। পদ্মায় পানি কমলে আশা করা যাচ্ছে আবার ইলিশের পরিমাণ বাড়বে।"
পদ্মার ইলিশের জন্য পরিচিত সদরপুরে এখন অনেকটাই ইলিশশূন্য পরিবেশ। নদীতে মাছ না থাকায় অর্থনৈতিকভাবে বিপদে পড়েছেন স্থানীয় জেলেরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং জলবায়ু ও পরিবেশগত পরিবর্তনের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
১২৭ বার পড়া হয়েছে