সর্বশেষ

সারাদেশ

আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১০

টেকনাফ প্রতিনিধি
টেকনাফ প্রতিনিধি

বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাকেন্দ্র থেকে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে কক্সবাজারের উখিয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন শিক্ষক। আটক করা হয়েছে ছাত্র আন্দোলন ও শিক্ষক নেতাসহ অন্তত ১৫ জনকে।

এই ঘটনা ঘটে বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে উখিয়া ডিগ্রি কলেজসংলগ্ন ফলিয়াপাড়া এলাকায়, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে।

সকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে মূল সড়কের পাশে অবস্থান নিলেও সাড়ে ৯টার দিকে তারা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের সংযোগ সড়কগুলোও অবরোধ করে ফেলেন, ফলে যানজট ও যাত্রী দুর্ভোগ বাড়তে থাকে। এনজিও কর্মীদের যানবাহন আটকে পড়ে।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষকদের সরে যেতে বললে উত্তেজনা ছড়ায় এবং একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষক আহত হন। আহতদের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার প্রতিনিধি জিনিয়া শারমিনসহ আরও কয়েকজন। সেখান থেকেই পুলিশ জিনিয়াসহ মোট ১৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।


এক নারী শিক্ষক জানান, “যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

তাদের অভিযোগ, চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা হলেও, এখন আর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।
তাঁদের দাবি—চাকরি পুনর্বহাল না হলে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি ভেঙে পড়বে, আর চাকরি হারানো শিক্ষকদের পরিবারে দেখা দেবে অভাব ও দুশ্চিন্তা।


উখিয়া থানার ওসির বক্তব্য পাওয়া না গেলেও পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, “শিক্ষকেরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে যানজট সৃষ্টি করছিলেন। জনদুর্ভোগ কমাতে পুলিশ তাদের সরে যেতে বললেও তারা উত্তেজনাকর আচরণ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।”

জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “সড়ক অবরোধ তুলে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”


রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে কাজ করা ১ হাজার ১৭৯ জন স্থানীয় শিক্ষককে তহবিল সংকটের অজুহাতে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর থেকেই চাকরি ফিরে পেতে আন্দোলন করছেন তাঁরা।

গত সোমবারও উখিয়ার কোটবাজারে ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষকরা, এতে পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, ইউনিসেফের অর্থায়নে শিক্ষাকেন্দ্রগুলো চালুর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে ব্র্যাকের মাধ্যমে ১৫০টি শিক্ষাকেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

তবে এখনো তহবিল না আসায় পুনর্বহালের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি।


বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে ১৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে।
প্রায় আড়াই লাখ শিশু-কিশোরকে শিক্ষা দেওয়া হয় প্রায় ৪ হাজার শিক্ষাকেন্দ্রে।
ছাঁটাই হওয়া শিক্ষকদের বড় অংশই স্থানীয়, এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রগুলোতে কাজ করে আসছিলেন।

১৬০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন