শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫ ৭:০৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আজ পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত বিচারিক প্যানেল এ কার্যক্রম শুরু করে।
আজকের দিনে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিচ্ছেন তিনজন সাক্ষী—শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল, প্রত্যক্ষদর্শী জসিম এবং জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এনাম।
মামলার আসামিদের মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এরইমধ্যে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল এখনও পলাতক অবস্থায় রয়েছেন।
এ মামলায় এ পর্যন্ত নয়জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সর্বশেষ ১৭ আগস্ট চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তারা হলেন—সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, স্থানীয় বাসিন্দা মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সজল হোসেনের মা শাহীনা বেগম। সেদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ চলে, যদিও মাঝে কিছুক্ষণ বিরতি দেওয়া হয়।
সাক্ষীদের জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, যিনি শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে নিযুক্ত রয়েছেন। অন্যদিকে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম এবং অন্যরা।
আজ সকালে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে করে মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে।
এর আগে, ৬ আগস্ট তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে প্রত্যক্ষদর্শী রিনা মুর্মু ও একেএম মঈনুল হক জবানবন্দি দেন। আর ৪ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে বক্তব্য দেন আহত শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও চোখ হারানো দিনমজুর পারভীন। তারা অভিযোগে শেখ হাসিনা ও অন্যদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মামলার সূচনায় ৩ আগস্ট প্রথম সাক্ষী হিসেবে বক্তব্য দেন আহত আন্দোলনকারী খোকন চন্দ্র বর্মণ।
উল্লেখ্য, ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগপত্রটি ছিল বিশদভাবে প্রস্তুত—মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার মধ্যে ২,০১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, ৪,০০৫ পৃষ্ঠা জব্দতালিকা ও অন্যান্য প্রমাণাদি এবং শহীদদের তালিকা ২,৭২৪ পৃষ্ঠায় বিস্তৃত। সাক্ষী তালিকায় রয়েছেন ৮১ জন।
চিফ প্রসিকিউটরের কাছে ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরবর্তীতে তা যাচাই-বাছাই শেষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
১২১ বার পড়া হয়েছে