‘ব্ল্যাক উইডো' : ২২ বছরে ১১ স্বামীকে হত্যার অভিযোগ

বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সম্পত্তির লোভে ধারাবাহিকভাবে স্বামী হত্যার অভিযোগে এক ইরানি নারীকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। কুলসুম আকবরি (৫৬) নামের ওই নারীকে নিয়ে এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত দুই দশকে অন্তত ১১ জন স্বামীকে কৌশলে বিয়ে করে হত্যা করেছেন তিনি। ইরানের গণমাধ্যম ও পুলিশ তাকে ‘ব্ল্যাক উইডো’ নামে আখ্যায়িত করেছে।
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, ২০০০ সাল থেকে কুলসুম বয়স্ক, ধনী এবং একাকী পুরুষদের টার্গেট করতেন। প্রথমে ঘনিষ্ঠতা, এরপর বিয়ে, তারপর সম্পত্তি নিজের নামে করে নেওয়ার পর চলত পরিকল্পিত হত্যা। কখনো বিষ, কখনো মাদক, আবার কখনো ভুল ওষুধের সাহায্যে মৃত্যুর ফাঁদ পাততেন তিনি।
প্রতিটি মৃত্যুই এতটাই নিখুঁতভাবে সাজানো ছিল যে, পরিবারের সদস্যরা তা স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে মেনে নেন। হৃদরোগ, বার্ধক্যজনিত জটিলতা কিংবা হঠাৎ অসুস্থতার কারণে মৃত্যু বলে ধরেই নেওয়া হতো। আর সেই সুযোগেই কুলসুম নিজের নামে সম্পত্তি লিখিয়ে নিতেন এবং নতুন শিকার খুঁজে নিতেন।
এই ভয়ঙ্কর চক্রের পর্দা ফাঁস হয় ২০২৩ সালে, তার শেষ স্বামী গোলামরেজা বাবাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায়। বাবাইয়ের ছেলে সন্দেহজনক পরিস্থিতি লক্ষ্য করে পুলিশে অভিযোগ করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে কুলসুমের অতীত—যেখানে আরও দশজন স্বামীর মৃত্যু জড়িত।
এমনকি ২০২০ সালে বিষ খাইয়ে হত্যা করতে ব্যর্থ হওয়া এক স্বামী জীবিত থেকে যান এবং পরবর্তীতে পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে কুলসুম তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, হত্যার সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন এবং মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
এদিকে, নিহতদের পরিবার ও সাধারণ জনগণ দ্রুত তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। তবে কুলসুমের আইনজীবীরা তার মানসিক অবস্থা পর্যালোচনার দাবি তুলেছেন, যা নিহতদের পরিবার প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের ভাষায়, “এটি কোনো মানসিক বিকারগ্রস্ততার কাজ নয়, বরং ঠান্ডা মাথায় করা সুপরিকল্পিত খুন।”
মামলার রায় এখনও ঘোষণা হয়নি, তবে শিগগিরই আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
১৬৬ বার পড়া হয়েছে