জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, ৭৩ সনদ বাতিল

মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫ ৬:৩২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গত বছরের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৬৪ জন শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
একইসঙ্গে ৪৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার এবং ৭৩ জন সাবেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাসনদ বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, “২০২৪ সালের ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত গণ-আন্দোলন দমনে অংশ নেওয়া হামলাকারী শিক্ষার্থীদের মোট সংখ্যা ছিল ২২৯ জন। এর মধ্যে ১৩০ জন বর্তমানে অধ্যয়নরত এবং ৯৯ জন সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে অধ্যয়নরতদের মধ্যে ৬৪ জনকে আজীবন বহিষ্কার, ৩৭ জনকে ২ বছর, ৮ জনকে ১ বছর এবং ১ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।”
সাবেকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
সাবেক ৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৩ জনের শিক্ষা সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল এবং অপর ৬ জনের সনদ ২ বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বাকিদের বিষয়েও তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
উপাচার্য আরও বলেন, “হামলায় অংশ নেওয়া বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বিচারযোগ্য নয়। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) পাঠানো হবে।”
ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতা
প্রশাসন জানিয়েছে, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে ভিডিও ফুটেজ, সাক্ষ্য ও তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
৪০ জনকে অব্যাহতি
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকায় ৪০ জন শিক্ষার্থীকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন বর্তমানে অধ্যয়নরত ও ২০ জন সাবেক শিক্ষার্থী।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব বলেন, “অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সাক্ষ্য মেলেনি। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার পরও তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”
অব্যাহতি প্রাপ্তদের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপাচার্য মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিই ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবে।”
১০৮ বার পড়া হয়েছে