সর্বশেষ

রাজনীতি

১৯৭১ ছিল স্বাধীনতা অর্জন এবং ২০২৪ ছিল রক্ষার যুদ্ধ : তারেক রহমান

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫ ৬:২৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, আর ২০২৪ ছিল সেই স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।”

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের ত্যাগ জাতি কখনো ভুলবে না, যেমন ভুলেনি ’৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। ভাষণে তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টকে “ফ্যাসিস্টমুক্তির দিন” হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দিনটিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেন।

তারেক রহমান বলেন, “এক বছর আগে আজকের এই দিনে ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালায়। রাহুমুক্ত হয় বাংলাদেশ। এই দিনটি এখন গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের বিজয়ের দিন।”

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, সাবেক সরকার দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে গুম, খুন, অপহরণ, এবং বিচারবহির্ভূত নির্যাতনের মাধ্যমে দেশে “ভয়ভীতির সংস্কৃতি” কায়েম করেছিল। “গণতন্ত্রকামী মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে দেশে তৈরি হয়েছিল গোপন বন্দিশালা—‘আয়নাঘর’। যেখানে মানুষকে বছরের পর বছর অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আটকে রাখা হতো,”—বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছিল। “ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করা হয়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। অর্থনীতিকে দুর্নীতি ও লুটপাটে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল,” বলেন তিনি।

‘গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন দেড় হাজার মানুষ’
২০২৪ সালের আন্দোলনের তীব্রতা স্মরণ করে বিএনপি নেতা জানান, “জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ হাজার। অনেকেই পঙ্গু হয়েছেন, কেউ কেউ চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন।” তিনি শহীদদের স্মরণে গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।

তারেক রহমান বলেন, “এই শহীদদের প্রতি আমাদের ঋণ রয়েছে। সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে, এবং একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলে।”

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠায়’
তারেক রহমান বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রথম পদক্ষেপ হলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত, জনগণের প্রতি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করছে।”

তিনি সাবধান করে বলেন, “যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাবেক ফ্যাসিবাদী শাসনের সঙ্গে তুলনা করছেন, তারা ইতিহাসকে অবমাননা করছেন। ৫ আগস্ট যা ঘটেছে, তা শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও নজিরবিহীন।”

তারেক রহমান দাবি করেন, “৫ আগস্ট পালিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার। তারা গণভবন, সংসদ, আদালত, এমনকি মসজিদ ও মন্ত্রিসভা পর্যন্ত ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। অথচ এখনো তাদের মাঝে অনুশোচনার লেশমাত্র নেই।”

‘ফ্যাসিবাদ আর কখনো ফিরে আসবে না’
বক্তব্যের শেষাংশে তারেক রহমান দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ কায়েম হতে দেওয়া হবে না। কেউ গণতন্ত্র হত্যা করতে পারবে না। তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না।”

তিনি বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তে ভেজা রাজপথে গড়ে উঠেছে জাতীয় ঐক্য। এই ঐক্য থাকবে, এই ঐক্যই হবে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার রক্ষাকবচ।”

১০৫ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
রাজনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন