সারাদেশ

সন্ত্রাসবিরোধী মিছিলে অংশ নেয়া যুবদল কর্মী ডাকাতির অপরাধে গ্রেফতার

কুমারখালী প্রতিনিধি
কুমারখালী প্রতিনিধি

সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫ ৩:০৭ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে অগ্রভাগে থাকা যুবদল কর্মী মামুন হোসেন একই রাতে ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।

তার গ্রেপ্তার ও থানায় হাতকড়া অবস্থায় থাকা ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার পর থেকে কুমারখালীতে বিএনপি ও যুবদলের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে।

জানা যায়, গত ২৪ জুলাই কুমারখালীতে বিএনপির ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুবদলের কর্মী মামুন হোসেন মিছিলের সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেন। এই মিছিল থেকে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড যুব জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শোভনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলা হয়।


কিন্তু ওই রাতেই মামুন হোসেন উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরশেদপুর এলাকার এসবিসি ইটভাটায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। একটি ডাকাত দল ইটভাটার একটি ট্রাক্টরের ইঞ্জিন ও ব্যাটারিসহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ লুট করে নেয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৬ লাখ টাকা।


পুলিশ তদন্ত করে ২৭ জুলাই মামুন হোসেন ও আরেক ডাকাত রমজানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। মামুন নন্দলালপুর ইউনিয়নের বুজরুক বাঁখই গ্রামের বাসিন্দা এবং সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামুন এর আগে এক এনজিও নারী কর্মীকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে ছিলেন। ফিরে এসে এলাকায় জমি দখল, গবাদি পশু লুট, গাছ কেটে নেওয়াসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি কোরবানির মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।


মামুনের গ্রামে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয়দের অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চান না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, মামুন কুজে নজরুলের নেতৃত্বে একটি চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে মিলে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে।

এদিকে মামুনের মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল হাসান রজন জানান, “মামুন যুবদলের কোনো পদে নেই। জিয়া মঞ্চের আহ্বায়ক রাকিবের আত্মীয় হওয়ায় সে মিছিলে অংশ নিয়েছিল।” মিছিলের অগ্রভাগে তার থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রজন কোনো মন্তব্য না করে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।


উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই কুমারখালীর দুর্গাপুর কাজীপাড়ায় পরিবহন ইজারাকে কেন্দ্র করে জামায়াত নেতা শোভনের অনুসারীদের সঙ্গে জিয়া মঞ্চের নেতা রাকিব হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষ ঘটে। এর জেরে ১৭ জুলাই রাকিবের বোন রুমানা আক্তার নিশি শোভনসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পাল্টা মামলায় ১৮ জুলাই শোভন রাকিবকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামুনের গ্রেপ্তারের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—চাঁদাবাজি বিরোধী মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া একজন কীভাবে রাতেই ডাকাতির ঘটনায় জড়াতে পারে? এতে বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্বকে মুখ রক্ষা করতে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে।

১৭৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন