রাজশাহীতে বাড়ছে ডেঙ্গুর স্থানীয় সংক্রমণ

সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫ ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজশাহীতে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও রোগীরা।
গত এক সপ্তাহে একাধিক ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আজ সোমবার (৩০ জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও সাতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। এর মধ্যে পাঁচজনই রাজশাহী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস জানান, ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বিগত বছর রোগীর সংখ্যা ছিল বিপুল, এবারও একই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি। তাঁর মতে, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগ এবং জনগণের ব্যক্তিগত সচেতনতা ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজশাহীর চারঘাট, বাঘা এবং নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীরা ভর্তি হয়েছেন। ৬০ বছর বয়সী এক রোগী নুরুন্নাহার, যিনি চারঘাটে নিজ বাড়িতে থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একজন রোগীর স্বজন জানান, বয়সের কারণে তাঁর শারীরিক অবস্থা কিছুটা সংকটাপন্ন।
আরেক রোগীর বাবা জানান, তাঁর ছেলে শহরের ভেতরেই ছিলেন, বাইরে কোথাও যাননি—তবুও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। একইভাবে আরও এক রোগী জানান, রাজশাহী শহরেই থেকে সংক্রমিত হয়েছেন এবং চিকিৎসার পর এখন সুস্থ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৯৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭৮ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন, আর মারা গেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার দুইজন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ১৩ জন, যাঁরা সবাই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন।
এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নগরের উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর বিস্তার তুলনামূলকভাবে কম। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে শহরের ১২টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু রয়েছে। গতকাল ১৮ জনের পরীক্ষা হলেও কারও দেহে ডেঙ্গু ধরা পড়েনি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কয়েক দিনের মধ্যেই শহরজুড়ে প্রচারাভিযান শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে কোনো রোগী ভর্তি হননি। তবে সতর্কতা হিসেবে উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও সচেতনতামূলক প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে গাফিলতির সুযোগ থাকলে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।’’
১২০ বার পড়া হয়েছে