জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে বন্যা, প্লাবিত একাধিক জেলা

সোমবার, ২ জুন, ২০২৫ ৭:১৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার দিবাগত রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত তিনটি স্থানে ডাইক ভেঙে প্রবল স্রোতে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। একই সঙ্গে জেলার বিভিন্ন এলাকা এবং দেশের আরও কয়েকটি জেলাও প্লাবিত হয়েছে।
প্রথম ডাইক ভাঙে রাত আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে, জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামে। এরপর সোমবার ভোরে বাখরশাল এবং সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় আরও দুটি স্থান দিয়ে বাঁধ ভেঙে যায়। এসব এলাকায় এখন প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করছে, প্লাবিত হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।
জানা গেছে, রোববার দিনভর কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন স্থানে ডাইকে ফাঁটল দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা বালু ও মাটি ভর্তি বস্তা দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করলেও প্রবল স্রোতের সামনে তা টিকেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকেও পলিথিন দিয়ে বাঁধ ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, “পরিস্থিতি আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। বন্যাকবলিত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, “গতকাল ডাইকে ফাঁটল দেখা গিয়েছিল, আজ ভাঙার খবর পেয়েছি। আমাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
অন্যান্য জেলাতেও বন্যার আশঙ্কা
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে।
শেরপুরে ঝিনাইগাতির নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কালি নগর ও পাগলার মুখ এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। কাঁচা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা, কারণ পানি জমে থাকায় ধান শুকানো সম্ভব হচ্ছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় দক্ষিণ ইউনিয়ন, মোগড়া ও আরও দুটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে আছে। ফসলি জমি ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাওড়া নদীর বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা।
রাঙামাটিতে বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ির নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়ছে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে জেলা প্রশাসন ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। কিছু এলাকায় ইতোমধ্যে ছোটখাটো ধসের ঘটনা ঘটেছে।
বান্দরবানে টানা ৫ দিনের বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা-আলিকদম সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
১২৯ বার পড়া হয়েছে