সর্বশেষ

সারাদেশ

সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা: বিপাকে উপকূলের বনজীবীরা

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা প্রতিনিধি

শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫ ২:৩৯ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে তিন মাসের জন্য পর্যটক ও বনজীবীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ।

১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এজেডএম হাছানুর রহমান।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্ষাকালে সুন্দরবনের নদী ও খালে ২৫১ প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে। এ সময় মাছ ধরা বন্ধ রাখা হলে প্রাকৃতিকভাবে মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এজন্যই প্রতিবছর এ সময়ে সুন্দরবনে প্রবেশ, মাছ ধরা এবং পর্যটন কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের কয়রা এলাকায় ইতোমধ্যে মাইকিং করে স্থানীয়দের এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় টহল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ সময় বন বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো পাশ-পারমিট দেওয়া হবে না।

তবে এই নিষেধাজ্ঞার কারণে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপকূলীয় অঞ্চলের বনজীবীরা। কয়রার শাকবাড়িয়া নদীর তীর ঘুরে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা শতাধিক মাছধরা নৌকা তীরে বাঁধা রয়েছে। অনেকেই নৌকাগুলো মেরামত করছেন।

পাথরখালী গ্রামের জেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, “সাগরে মাছ ধরা জেলেদের কিছু সহায়তা দেওয়া হলেও, সুন্দরবনের জেলেরা কোনো সহায়তা পান না। সবকিছুর দাম বেড়েছে, এমন অবস্থায় সরকারি সহায়তা না পেলে পরিবার চালানো কঠিন হয়ে যাবে।”

কয়রা উপজেলা মৎস্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১৩ হাজার ৫২৬ জন। তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃত জেলের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কয়রার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। প্রায় ৫০ হাজার পরিবার মাছ, কাঁকড়া ও বনজ সম্পদ আহরণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার সরকার বলেন, “অনেকে প্রকৃত জেলে হলেও তাদের কার্ড নেই। আবার অনেকে জেলে না হয়েও কার্ডধারী। যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত জেলেদের তালিকাভুক্ত করার কাজ চলছে।”

বন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার সময় বন্যপ্রাণী শিকার ও অবৈধ আহরণ বন্ধে কঠোর নজরদারি থাকবে। খুলনা রেঞ্জের সব স্টেশনে পাশ-পারমিট বন্ধ রাখা হয়েছে এবং টহল জোরদার করা হয়েছে।

ডিএফও এজেডএম হাছানুর রহমান বলেন, “আমরা বনজীবীদের জন্য বিকল্প খাদ্য সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছি। প্রত্যেক পরিবারকে মাসে ৪০ কেজি চাল দেওয়ার জন্য তালিকা মৎস্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।”

বন সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত প্রয়োজনীয় হলেও, বিকল্প কর্মসংস্থান ও সহায়তা ছাড়া বননির্ভর জনগোষ্ঠীর জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৩১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন