রাজশাহীর বিভাগে ৬১ চালকলের লাইসেন্স বাতিল

সোমবার, ৫ মে, ২০২৫ ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সরকারি খাদ্য গুদামে চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করার দায়ে রাজশাহী বিভাগের ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
সরকারি খাদ্য গুদামে চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করার দায়ে রাজশাহী বিভাগের ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে এসব চালকল আর চাল উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন বা সরবরাহ করতে পারবে না।
খাদ্য বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, গত আমন মৌসুমে বিভাগের ১৬২টি চালকল সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছিল। এর মধ্যে মাত্র ৩০টি চালকল চুক্তির ৮০% চাল সরবরাহ করেছে। ৭১টি চালকল সরবরাহ করেছে ৫০%। কিন্তু ৬১টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও কোনো চালই সরবরাহ করেনি। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য বিভাগ সম্প্রতি এই ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে, গত ১৯ মার্চ চুক্তিযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি না করায় রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকল মালিককে শোকজ করা হয়েছিল। আঞ্চলিক ও জেলা খাদ্য বিভাগ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় গত ২ এপ্রিল এই ৬১টি চালকলের খাদ্য উৎপাদন সংক্রান্ত লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্যমতে, সদ্য সমাপ্ত আমন সংগ্রহ মৌসুমে বিভাগের আট জেলায় সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন, যার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ টন। আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ টন, সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ টন।
লাইসেন্স বাতিল হওয়া ৬১টি চালকলের মধ্যে সেদ্ধ চাল সরবরাহ না করা চালকলগুলো হলো: রাজশাহীতে ১টি, নওগাঁয় ৮টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩টি, পাবনায় ১১টি, বগুড়ায় ৩৪টি এবং জয়পুরহাটে ৩টি। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১টি চালকল আতপ চাল সরবরাহ করেনি।
লাইসেন্স বাতিলের আগে এসব চালকল মালিকদের ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছিল। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চাকদার জানান, সরকার নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করে অনেক চালকল মালিক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রতি টনে প্রায় ২ হাজার টাকা লোকসান হওয়ায় অনেকের পক্ষে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। তিনি মনে করেন, সরকার যদি সঠিক দাম নির্ধারণ করে, তাহলে সব মিল মালিক চাল সরবরাহ করবে।
রাজশাহী খাদ্য অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি উপপরিচালক ওমর ফারুক জানান, চাল সরবরাহ না করা বা চুক্তিযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চুক্তি না করা ৯১৩টি চালকল মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ৬১টির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে এবং বাকিদের সতর্ক করা হয়েছে। যারা চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
১০৭ বার পড়া হয়েছে