২০২৫ সালে ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দ্বিগুণেরও বেশি, মানবাধিকার সংগঠনের উদ্বেগ
সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬:৫৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইরানে ২০২৫ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে বলে ধারণা করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
নরওয়েভিভিত্তিক সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত এক হাজার ৫০০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য তারা যাচাই করতে পেরেছে।
আইএইচআর বলছে, যাচাই করা এই সংখ্যাই চূড়ান্ত নয়। কারণ, ইরানের কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কোনো সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে না। ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
সংগঠনটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইরানে ৯৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করা গিয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, চলতি বছরে এই সংখ্যা আরও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অন্যান্য পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার হিসাবের সঙ্গেও আইএইচআর- এর দেওয়া তথ্যের মিল পাওয়া যাচ্ছে।
ইরান সরকার বরাবরই দাবি করে আসছে, কেবল ‘সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের’ ক্ষেত্রেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, বাস্তবে এই শাস্তির প্রয়োগ অনেক বেশি বিস্তৃত।
২০২২ সালে কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে যে ব্যাপক গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তার পর থেকেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনিকে তেহরানে নীতি পুলিশ হিজাব ঠিকভাবে না পরার অভিযোগে আটক করেছিল। তার মৃত্যুর ঘটনাটি ইরানের ধর্মীয় শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।
বিক্ষোভ দমনে সরকারের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে ব্যাপক ধরপাকড় ও দমন- পীড়ন চালানো হয়। আইএইচআর- এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইরানে প্রায় ৫২০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩২ জনে।
যদিও বিক্ষোভকারী ও ‘গুপ্তচর’ অভিযোগে দণ্ডিত কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল, তবে মোট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রায় ৯৯ শতাংশই হত্যা কিংবা মাদক-সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডিত ছিলেন। এই অনুপাত সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
১২২ বার পড়া হয়েছে