কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের ফলে একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ উড়ে গেছে এবং ভবনের অন্যান্য অংশেও ফাটল দেখা দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ এবং বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, খবর পেয়ে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে ককটেল ও বোমা তৈরির উপকরণ পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিস্ফোরণের সময় বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। পরে দেখা যায়, মাদ্রাসার পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল ধসে পড়েছে এবং ছাদ ও বিমে ফাটল ধরেছে। পাশের আরও দুটি কক্ষেও ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাদ্রাসাটিতে সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। ফলে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের দুই সন্তান উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে আছিয়া বেগম ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অন্য পাশে একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবারসহ প্রায় তিন বছর ধরে বসবাস করছিলেন।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণের কারণে আমাদের ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরেছে এবং ঘরের ভেতরের আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ভবনমালিক পারভীন বেগম জানান, প্রায় তিন বছর ধরে তাঁর ভবন ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা করা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসার আড়ালে কী ধরনের কার্যক্রম চলছিল, তা আমি জানতাম না। আজ এসে দেখি পুরো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত। পুলিশ কেমিক্যাল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।’
ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদার করেছে। বিস্ফোরণের উৎস ও জড়িতদের শনাক্তে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
১১৭ বার পড়া হয়েছে