ঈশ্বরদীতে বিএনপি–জামায়াত সংঘর্ষে অস্ত্র হাতে ভাইরাল যুবক তুষার মণ্ডল
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ৫:১৭ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবকের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে—ভিডিওতে দেখা যুবক তুষার মণ্ডল, যিনি স্থানীয়ভাবে জামায়াতের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত।
সাহাপুর ইউনিয়নের জগির মোড় ও চর আলহাজ মোড় এলাকায় সংঘর্ষের সময় ওই যুবককে প্রতিপক্ষের দিকে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি চালাতে দেখা যায়। ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই তুষার পলাতক রয়েছেন বলে তাঁর পরিবার জানিয়েছে। বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিলে তাঁর স্বজনরা জানান, ঘটনার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুষার মণ্ডল ঈশ্বরদী পৌরসভার ভেলুপাড়া এলাকার তাহের মণ্ডলের ছেলে এবং পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও পাবনা-৪ আসনের প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ সহচর মামুন মণ্ডলের সহযোগী।
ঘটনার পর বিএনপি ও জামায়াত উভয় পক্ষই ভাইরাল যুবকের পরিচয় নিয়ে একে অপরকে দায়ী করে বিবৃতি দেয়। জামায়াত প্রথমে দাবি করে, অস্ত্রধারী যুবক বিএনপি কর্মী। পরে বিএনপি পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে—তিনি জামায়াতের কর্মী এবং দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও একই দাবি করেছে।
স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের অভিযোগ—জামায়াত নেতাকর্মীরাই সেদিন গাড়িবহরসহ অস্ত্র নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করে হামলা চালায়। বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “জামায়াতের সশস্ত্র কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং পরে দায় আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে।”
অন্যদিকে জেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব মণ্ডল সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় বিএনপি সমর্থকরাই হামলা চালিয়েছে এবং ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তির সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দু’দিন আগে স্থানীয় কৃষক দলের নেতা মক্কেল মৃধা ও জামায়াত নেতা ইকবালের মধ্যে বিরোধের জের ধরেই বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জগির মোড়ে মক্কেল মৃধা ও তাঁর ছেলেকে লক্ষ্য করে প্রথম হামলা হয় বলে জানান তারা। পরবর্তী সময়ে দুই স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, গুলিবর্ষণ ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
উল্লেখ্য, ঈশ্বরদীতে বিএনপি–জামায়াত বিরোধ নতুন নয়। এর আগে ১৫ মে একই অঞ্চলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়। এরপরও দু’দল একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছে।
১১৩ বার পড়া হয়েছে