নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও তারেক রহমানের দেশে ফেরার ব্যাপারে নতুন তথ্য
বৃহস্পতিবার , ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১:১৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেননি, তবে তিনি মধ্য ডিসেম্বরে দেশে ফিরে ভোটার হবেন বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দলের নেতারা বলছেন, তারেক রহমান চাইলে লন্ডন থেকেই ভোটার হতে পারতেন, কিন্তু তিনি দেশের প্রতি গভীর আস্থা ও দায়িত্ববোধের কারণে নিজে এসে ভোটার হবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির এই নেতা বর্তমানে লন্ডনে থাকলেও তিনি ভোটার হননি। তবে, প্রাপ্তবয়স্ক কেউ যদি ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েন, তবে তিনি যে কোনো সময় ভোটার হতে পারেন। নির্বাচনী তফসিলের আগেই ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ১৮ বছর বয়সী নাগরিকরা নতুন ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে, যারা বাদ পড়েছেন, তারা যদি ভোটার হতে চান, তাহলে নির্বাচন কমিশন ‘সাপ্লিমেন্টারি’ ভোটার তালিকা প্রকাশ করে এই সুযোগ দেবে। ভোটার হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে অবশ্য তাকে ভোটার হতে হবে।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি শুরু হয়। তখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। জোবাইদা রহমান সম্প্রতি দেশে ফিরে ভোটার হয়েছেন, তবে তারেক রহমান পযন্ত ভোটার হননি। তিনি এখনও নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেননি। তবে, দেশের ফিরলে তিনি অবশ্যই ভোটার হবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে স্বাক্ষর, ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ বাধ্যতামূলক। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরও, আবেদন করে তিনি ভোটার হতে পারবেন। বিএনপির সূত্র বলছে, তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা থাকায়, তাকে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই ভোটার হতে হবে।
দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনেও এ নিয়ে প্রবল আগ্রহ। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ের পরই তারেক রহমান দেশের ফিরবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিকল্পনায় ওমরাহ হজ পালনের বিষয়ও রয়েছে। কিছু সূত্র বলছে, তিনি সরাসরি দেশে ফিরবেন চার্টার্ড বিমানে। নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা দল গঠন ও অস্ত্র লাইসেন্সের জন্য আবেদন।
সরকারি সূত্র বলছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার জন্য কোনও বাধা নেই। তিনি যে কোনো সময় ফিরতে পারেন, সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে, তবে কয়েক দিন আগে বিষয়টি প্রকাশ পাবে। তার ফিরে আসার দিন লাখ লাখ নেতা-কর্মী ও সমর্থক রাজধানীতে জড়ো হবেন, যা হবে দেশের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। এই দিন বিএনপির নির্বাচনী প্রচার আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৭ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ এক-এগারো অঘটনের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর কারাগারে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি পান। এরপর চিকিৎসার জন্য পরিবারের সঙ্গে সপরিবারে লন্ডনে যান। এরপর থেকে সেখান থেকেই দলের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জন্য এখন অপেক্ষার পালা, কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান, তা জানতে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে, দেশের রাজনীতির নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের।
১২১ বার পড়া হয়েছে