হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা: দুর্বৃত্তদের আগুন ও নাশকতায় উদ্বেগ বাড়ছে
সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২:১৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা আবারও সহিংস রূপ নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় দুর্বৃত্তরা ধারাবাহিকভাবে আগুন ও নাশকতার ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
রাজধানীর মিরপুর, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, কদমতলীসহ অন্তত সাতটি স্থানে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, অধিকাংশ ঘটনাতেই আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়, ফলে কাউকে ঘটনাস্থলেই আটক করা সম্ভব হয়নি। কমলাপুর রেলস্টেশনের কাছে একটি ট্রেনের বগিতেও অগ্নিসংযোগের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
ঢাকার বাইরে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, পাবনা ও গোপালগঞ্জসহ অন্তত দশটি জেলায় একই ধরনের নাশকতা দেখা গেছে। গাজীপুরে একটি চলন্ত বাসে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা হয়, সৌভাগ্যক্রমে যাত্রীরা অক্ষত থাকলেও গাড়িটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি স্থানীয় ব্যাংক শাখা ও গোপালগঞ্জে সরকারি ভবনের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২৫টির মতো ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় সারাদেশে পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির অতিরিক্ত টহল জোরদার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা, আদালত এলাকা, গণপরিবহন টার্মিনাল এবং বড় শহরগুলোর প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, নাশকতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিভিন্ন জেলা থেকে অন্তত ৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রায় ঘোষণার আগে এমন সহিংসতা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। জনসাধারণের মধ্যে ভ্রমণে সতর্কতা বেড়েছে; অনেকেই অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিবহন মালিকদের একটি অংশ বাস না চালানোর কথা ভাবছেন, কারণ ক্রমাগত হামলার কারণে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিশ্লেষকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
১৩৮ বার পড়া হয়েছে