বেক্সিমকো টেক্সটাইল পুনরায় শুরু, কাজে ফিরছে ২৫ হাজার শ্রমিক
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বেক্সিমকো টেক্সটাইল ডিভিশন পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে জাপান-বাংলাদেশি ইথিক্যাল ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান রিভাইভাল গ্রুপ। নতুন ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক শৃঙ্খলাভিত্তিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কারখানার উৎপাদন শুরু হলে ২৫ হাজারের বেশি শ্রমিক সরাসরি কাজে ফিরবেন।
প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইকোমিলি, যার প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রথম ধাপে ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সুবিধা দেওয়া হবে এবং প্রয়োজন হলে তা ১০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
বেক্সিমকো টেক্সটাইল একসময় দেশের শীর্ষ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। তিন দশক সফল উৎপাদনের পর ঋণসংকটে বন্ধ হয়ে গেলে হাজারো শ্রমিক চাকরি হারান এবং আশপাশের এলাকার অর্থনীতি প্রভাবিত হয়। রিভাইভালের বিনিয়োগকে সেই বিপর্যয় থেকে উত্তরণের বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রিভাইভাল জানিয়েছে, কারখানাটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে, পুরোনো ব্যবস্থাপনা দলকে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আগের শ্রমিকদের পুনর্বহাল করা হবে। জাপানি-বাংলাদেশি মালিকানা থাকায় জাপান থেকে অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা শৃঙ্খলাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবেন। এছাড়া, স্বচ্ছতার জন্য একটি বৈশ্বিক বিগ ফোর অডিট ফার্ম নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি শুধু উৎপাদন নয়, বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও ফ্যাশন শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি রূপান্তর আনতে চায়। তারা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করবে এবং নতুন বৈশ্বিক অংশীদার যুক্ত করবে। প্রতিষ্ঠানটি দেশে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ, আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট কোর্স এবং প্রথমবারের মতো একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজাইন ইনস্টিটিউট স্থাপনেরও ঘোষণা দিয়েছে।
ত্রিপক্ষীয় লিজ চুক্তির খসড়া ইতিমধ্যেই জমা দেওয়া হয়েছে। জনতা ব্যাংকের বোর্ড সভার পর চলতি মাসেই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রিভাইভালের সিইও হুদা মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, 'এটি শুধু একটি কারখানার পুনরায় চালু নয়, হাজারো পরিবারের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ।' ইকোমিলির প্রেসিডেন্ট ড. ফারহান এস. করিম বলেন, 'এটি ব্রেইন ড্রেইনের গল্প নয়, ব্রেইন গেইনের গল্প।'
উৎপাদন ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হলে ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ ফিরে পাবেন। রিভাইভাল আশা করছে, ২০২৭ সালের মধ্যে বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন সম্ভব হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জাপানের শৃঙ্খলা, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তা এবং বাংলাদেশের দক্ষ শ্রমিকদের মিলিত প্রচেষ্টা বেক্সিমকো টেক্সটাইলকে দেশের শিল্পখাতে নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নেবে।
১০৫ বার পড়া হয়েছে