কর্মবিরতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষকদের
সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫ ৩:২৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন থেকে কর্মবিরতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আবারও তা প্রত্যাহার করে লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।
রোববার রাতের সভা শেষে মধ্যরাতে শিক্ষক নেতারা জানিয়ে দেন, কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি উভয়ই অব্যাহত থাকবে।
এর আগে সন্ধ্যায় সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এক বৈঠকে শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। সভা শেষে রাত পৌনে ১০টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ ঘোষণা দেন- শিক্ষকরা কর্মবিরতি স্থগিত করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও কর্মবিরতি স্থগিতের কথা জানানো হয়।
তবে শহীদ মিনারে ফেরার পর বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন–লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি ঘোষণা দেন, শিক্ষকরা কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি দুই-ই চালিয়ে যাবেন।
শিক্ষক নেতা মুহিব উল্লাহ বলেন, নেতারা জনরোষে পড়ে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এরপর মধ্যরাতে পাঁচ নেতা- খায়রুন নাহার লিপি, শাহিনুর আলআমিন, আবুল কাশেম, আনিসুর রহমান, মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ ও মাহবুবুর রহমান চঞ্চল- এক যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা দেন, কর্মবিরতি ও লাগাতার অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
তারা জানান, সোমবার বিকেল ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে ‘চূড়ান্ত’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
রোববারের বৈঠকে শিক্ষক নেতারা তাদের তিন দফা দাবি তুলে ধরেন-
১️. সহকারী শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ,
২️. চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতির জটিলতা নিরসন,
৩️. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হবে এবং দ্রুততার সঙ্গে সমাধানে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
শনিবার সকাল থেকে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিকেলে শাহবাগে মিছিল নিয়ে এগোতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শিক্ষক নেতাদের দাবি, এতে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন এবং ৫ জনকে আটক করা হয়। তবে পুলিশ জানায়, আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়।
পরে শহীদ মিনারে ফিরে শিক্ষকরা রোববার থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন। মধ্যরাতে তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে পুলিশের ‘হামলার’ প্রতিবাদ জানান।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে চারটি সংগঠন- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ- আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
এছাড়া একাদশ গ্রেডে বেতনসহ অন্যান্য দাবি নিয়ে আন্দোলনরত ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ও এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে।
১০৪ বার পড়া হয়েছে