রিমেক নয়, আত্মবিশ্বাসেই জয়ী হয়েছিলেন সালমান শাহ
রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫ ৭:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মৃত্যুর ২৯ বছর পরও তাঁর জনপ্রিয়তা যেন আরও বেড়েই চলেছে। ঢালিউডের ইতিহাসে সালমান শাহ নামটি আজও অমর। ছোট পর্দা ও মডেলিং থেকে বড় পর্দায় অভিষেক—সব জায়গাতেই তিনি ছিলেন আলাদা।
১৯৯৩ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্র দিয়েই তিনি হয়ে ওঠেন তারকাদের তারকা। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও দর্শকের হৃদয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন চিরদিনের জন্য।
তবে ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। কারণ ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছিল ভারতের ব্লকবাস্টার ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’-এর অফিসিয়াল রিমেক। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনাও শুনতে হয়েছিল সালমান শাহকে। কিন্তু সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে দেখা যায়, রিমেক সিনেমায় কাজ করার বিষয়ে তিনি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী ও স্পষ্ট বক্তব্যে দৃঢ়।
সাক্ষাৎকারে সালমান শাহ বলেন, একজন শিল্পীর উচিত সব ধরনের চরিত্রে কাজ করা। আমার প্রথম ছবিটি রিমেক হলেও এতে কোনো অযৌক্তিকতা ছিল না। আমি ভেবেছি, চরিত্রটি আমার হাতে এলে আমি কিছু ভিন্নভাবে, আরও ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব।
তিনি আরও বলেন, 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবিতে আমির খান অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু আমি কখনো তাঁকে অনুকরণ করার চেষ্টা করিনি। আমি আমার নিজস্ব স্টাইলেই কাজ করেছি। দর্শক যদি মনে করেন আমি ভালো করেছি, সেটাই আমার প্রাপ্তি।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেডের পক্ষ থেকে তাঁকে তিনটি হিন্দি ছবির কপিরাইট দেওয়া হয়- ‘সনম বেওয়াফা’, ‘দিল’ এবং ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’। পরবর্তীতে নতুন মুখ দিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মৌসুমীকে নায়িকা হিসেবে চূড়ান্ত করার পর নায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া হয় নবাগত ইমনকে, যিনি পরে ‘সালমান শাহ’ নাম ধারণ করেন।
ছবিতে সালমান শাহ ও মৌসুমীর পাশাপাশি অভিনয় করেছিলেন রাজীব, আহমেদ শরীফ, আবুল হায়াত, অমল বোসসহ আরও অনেকে। মুক্তির পর ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ তুমুল সাফল্য পায় এবং সালমান- মৌসুমী রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
সালমান শাহর নিজের কথায়, আমির খান যদি কিছু করতে পারেন, বাংলাদেশেও এমন শিল্পী আছেন, যিনি তাঁর সমকক্ষ কিংবা আরও ভালো কিছু করতে পারেন। আমি সেটাই প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম।
মাত্র চার বছরের অভিনয়জীবনেই সালমান শাহ প্রমাণ করেছিলেন আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম ও অভিনয়দক্ষতা দিয়েই একজন শিল্পী হয়ে উঠতে পারেন সময়ের সীমা ছাড়িয়ে চিরন্তন।
১০৭ বার পড়া হয়েছে