ফরিদপুরে শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা: দুলাভাইসহ চারজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
বৃহস্পতিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ৯:৪১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফরিদপুরে শ্যালিকাকে (২৫) গণধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দুলাভাইসহ চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, জেলা ও দায়রা জজ শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দুই ধারায় দণ্ড প্রদান করেন। হত্যার ঘটনায় চার আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনায় তাদেরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। আদালত জানান, দণ্ডপ্রাপ্তরা উভয় সাজা একসঙ্গে ভোগ করলেও আর্থিক জরিমানাগুলো আলাদাভাবে পরিশোধ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর বেপারী (৩৮), একই গ্রামের কামরুল মৃধা (৩৮), আলী বেপারী (৪৩) ও চরদড়ি কৃষ্ণপুর গ্রামের বক্কার বেপারী (৩৮)। এদের মধ্যে নিহত নারীর দুলাভাই জাহাঙ্গীর বেপারী মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বলে আদালতে প্রমাণিত হয়।
এ মামলার আরও দুই আসামি— মমতাজ বেগম (৬৩) ও আবুল কালাম বেপারী (৬৮)—কে মামলার আলামত নষ্ট করার দায়ে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর বেপারী ছাড়া বাকি আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১ অক্টোবর রাত ১টার দিকে দুলাভাই জাহাঙ্গীর বেপারী তার সহযোগীদের নিয়ে ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে “তোমার বোন এসেছে, দরজা খোল” বলে ডেকে নেয়। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তারা ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে।
পরে নিহতের মা বাদী হয়ে ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাহাঙ্গীরসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর ফরিদপুর ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী ভুঁইয়া বলেন, “ঘটনার পর স্থানীয় থানা মামলা না নেওয়ায় পরে আদালতের শরণাপন্ন হতে হয় ভুক্তভোগীর পরিবারকে। তদন্তে বিলম্ব হলেও শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে— আমরা এতে সন্তুষ্ট।”
১০৯ বার পড়া হয়েছে