সর্বশেষ

সারাদেশ

পাটুরিয়া ঘাটে ‘সেলফি’ বাস কাউন্টারকে ঘিরে লাখ টাকার চাঁদাবাজি

সোহেল রানা, মানিকগঞ্জ
সোহেল রানা, মানিকগঞ্জ

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ৮:২১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ঘাটে “সেলফি” বাস কাউন্টারকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন লাখ টাকার চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, মাসে এ টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় অর্ধকোটি। দীর্ঘদিন ধরে এ অনিয়ম চললেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাউন্টারের ইনচার্জ সুলতানের নেতৃত্বে একটি চক্র প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই চাঁদাবাজির পুরো সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে।

বর্তমানে “সেলফি” বাস সার্ভিসের রুট পারমিট রয়েছে মাত্র ৮০টি বাসের জন্য। কিন্তু তাদের ব্যানারে চলাচল করছে প্রায় ৩৮৫টি বাস, যার অধিকাংশেরই রুট পারমিট ও ফিটনেস সনদ নেই। এসব অবৈধ বাস প্রতিদিন ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে চলাচল করছে, ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, আর বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

বাস ছাড়ার নির্ধারিত সময় ১০ মিনিট অন্তর থাকলেও সেলফি কাউন্টার থেকে প্রতি ৩–৪ মিনিট পরপরই ট্রিপ পরিচালনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চালক ও সুপারভাইজার জানান, চাঁদার প্রতিবাদ করলে ইনচার্জ সুলতান ও তার সহযোগীরা মারধর ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দেন। তারা বলেন, “প্রতিবাদ করলে ঘাটে টিকে থাকা যায় না। সবাই জানে, এই টাকার ভাগ বিভিন্ন জায়গায় যায়—তাই কেউ মুখ খোলে না।”

একজন সুপারভাইজার জানান, বর্তমানে নিয়মিত চলাচল করা প্রায় ৩৪০–৩৪৫টি বাসের প্রতিটি থেকে প্রতিদিন ‘জিপি’ বাবদ নেওয়া হয় ২৫০ টাকা করে। এতে প্রতিদিন পাটুরিয়া ঘাটে উঠছে প্রায় এক লাখ টাকা। এর মধ্যে কাউন্টার স্টাফদের বেতন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে যায় সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, বাকিটা ভাগ হয় প্রভাবশালী মহলের মধ্যে।

কাউন্টারের এক কর্মচারী বলেন, “স্টাফদের বেতন বাদে বাকি টাকা ভাগ হয় আলাল চেয়ারম্যান, সবুজ, রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার মধ্যে। সবকিছু দেখভাল করেন ইনচার্জ সুলতান।”

অভিযোগের বিষয়ে ইনচার্জ সুলতান বলেন, “কোম্পানির নির্ধারিত স্টাফ বেতনের বাইরে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। যা নেওয়া হয়, তা বেতন বাবদই।”

শিবালয় মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, “সেলফি কাউন্টার থেকে কারা চাঁদা নিচ্ছে বা ভাগ করছে, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।”

বরংগাঈল হাইওয়ে থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “রুট পারমিট ছাড়া কোনো গাড়ি মহাসড়কে চলার সুযোগ নেই। নিয়মিত চেকপোস্টে কাগজপত্র পরীক্ষা চলছে, অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

অন্যদিকে, শিবালয় থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, “ঘাট এলাকায় চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

১১২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন