নিপীড়িত মানুষের হয়ে কথা বলি, ন্যায় বিচারের পক্ষে সোচ্চার হই

রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১:০৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
পাহাড় কেটে স্বর্ন খনির বর্জ্য নদীতে ফেলার প্রতিবাদে আন্দোলন করায় কারাগারে আছেন কলম্বিয়ান কৃষক ডন পোরফিরিও। তাঁর বয়স এখন ছিয়াশি। তাঁর সাথে আরো ১১ জন কৃষক কলম্বিয়ার কারাগারে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কৃষিকাজের জন্য জল রক্ষার আন্দোলন করা। অভিযোগ করেছে খনি হতে স্বর্ন উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান।
একদিকে কৃষকদের আন্দোলন দমনে হামলা ও গনহারে গ্রেফতার চলছে অন্যদিকে বিশাল খনি কোম্পানিটি তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য পুনর্নবীকরণের অনুমতি চাইছে ।
কৃষকরা আন্দোলন করছে তাদের নদী, পানি ও পর্বত রক্ষা করে কৃষি কাজ অব্যাহত রাখার জন্য। কিন্ত পুনর্নবীকরণের অনুমতির মাধ্যমে একটি পাহাড় কেটে ফেলার পর লক্ষ লক্ষ টন বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলা হবে। এতে কফি এবং পরিষ্কার জল দ্বারা টিকে থাকা বিস্তৃত অঞ্চলকে চিরতরে ক্ষতি করবে স্বর্ন উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাংলোগোল্ড আশান্তি ।
উল্লেখ যে, অ্যাংলোগোল্ড আশান্তি - একটি বিশ্বব্যাপী খনির জায়ান্ট। আর এর চেয়েও খারাপ কথা: তারা কেবল পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ নয়। তারা ১১ জন কৃষকের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চুরির অভিযোগও চাপিয়েছে , যার মধ্যে ৮৬ বছর বয়সী ডন পোরফিরিও রয়েছে।
ডন পোরফিরিওর কাছে এই পর্বত কেবল ভূমি নয় - এটি তাদের জীবন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি এটিকে পবিত্র বলে মনে করে আসছে। কিন্তু অ্যাংলোগোল্ড আশান্তির কাছে এটি কেবল লাভজনক পর্বত। তাদের প্রস্তাবিত মেগাপ্রকল্পটি ১৩০ মিলিয়ন টন পাথর উত্তোলন করবে এবং ১১৯ মিলিয়ন টন বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে যাবে - যা নদী, বাস্তুতন্ত্র এবং জীবিকার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনের কর্মীরা সোচ্চার হয়েছে ডন পোরফিরিওদের মুক্তির জন্য। ইতোমধ্যে কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে, এই অনুমতি নবায়ন কেবল ভূমির জন্য একটি বিপর্যয় হবে না - এটি শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধের নীরবতাকে বৈধতা দেবে।
কানাডায় আসার পর আমি যে সংগঠনের সাথে যুক্ত হই আভাজ (Avaaz is a global web movement to bring people-powered politics to decision-making everywher.) এর অন্যতম মুখপাত্র মিগুয়েল ই-মেইলে জানিয়েছে, ' রনি, আমরা আগেও এটা করেছি। যখন আমাজনের বনরক্ষীদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যখন যুক্তরাজ্যে শান্তিপ্রিয় জলবায়ু কর্মীদের কথা বলার জন্য জেলে পাঠানো হয়েছিল, যখন কঙ্গোর সম্প্রদায়ের নেতারা দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয়েছিলেন - তখন আমাদের আন্দোলন উঠে এসেছিল। এখন জেরিকো এগারোকে আমাদের প্রয়োজন। তাদের সাথে দাঁড়ানোর অর্থ মর্যাদার পক্ষে দাঁড়ানো, ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানো। আসুন বিশ্বকে দেখিয়ে দেই যে জনগণের শক্তি সোনার চেয়েও গভীর।'
মিগুয়েলের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে দুনিয়ার শান্তিপ্রিয় গনতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের প্রতি আহবান, আসুন বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের হয়ে কথা বলি,ন্যায় বিচারের পক্ষে সোচ্চার হই।
( ব্যক্তিগত মেইল অবলম্বনে লেখা।)
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।
১৮৮ বার পড়া হয়েছে