চতুর্থ দিনের মতো বন্ধ রাজশাহী অঞ্চলের দূরপাল্লার বাস

সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৭:৩২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলায় টানা চারদিন ধরে দূরপাল্লার বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার পর হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় বাস মালিক সমিতি। তারপর থেকে আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ওই তিন জেলার কোনো দূরপাল্লার বাস সড়কে নামেনি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আজ দুপুরে ঢাকার গাবতলীতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এ বৈঠকেই সমস্যার সমাধান আসতে পারে।
যাত্রীদের দুর্ভোগ
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা নানাভাবে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে যাচ্ছেন, আবার অনেকেই দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে প্রাইভেট গাড়ি বা স্থানীয় বাসে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
আজ সকালে রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনালে যাত্রীদের অপেক্ষায় দেখা যায়।
পবার দামকুড়া এলাকার যাত্রী আবদুর রহিম বলেন,
“ঢাকায় যাওয়া খুব জরুরি। জানতাম বাস বন্ধ, কিন্তু তবুও এসেছি। এখন স্থানীয় বাসে ৬০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে, যেখানে সাধারণত ৪০০–৫০০ টাকার মধ্যে ভাড়া হয়।”
একই ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েছেন আরেক যাত্রী আব্দুল হালিম। অনলাইনে টিকিট কাটলেও এসে দেখেন কাউন্টার বন্ধ, কোনো বাস নেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“টিকিট যখন বিক্রি হয়, তখন তো ধরে নিই বাস চলবে। এখন এসে দেখি, সব বন্ধ! এটা পরিষ্কার হয়রানি। আমি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
পেছনের ঘটনা
জানা গেছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে বাস মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বে একাধিকবার বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে।
৭ সেপ্টেম্বর শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন।
আশ্বাসে বাস চললেও ২২ সেপ্টেম্বর আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
কিছুটা সময় চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও মালিকদের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২৫ সেপ্টেম্বর রাত থেকে আবারও বন্ধ ঘোষণা আসে।
মালিক ও শ্রমিকদের বক্তব্য
উত্তরবঙ্গ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব নজরুল ইসলাম জানান,
“ঢাকায় গতকাল একটি প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। আজ আবার গুরুত্বপূর্ণ সভা হবে, যেখানে রাজশাহীর মালিকরাও থাকবেন। সভার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।”
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন,
“২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার সভায় বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু মালিকরা সেটা মানেনি। তারাই বাস বন্ধ করেছেন। এখন যে দুর্ভোগ হচ্ছে, তার দায় শ্রমিকদের নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“আজকের বৈঠকে শ্রমিক স্বার্থ নিশ্চিত না হলে আমরা আলোচনা মানি না।”
১১৭ বার পড়া হয়েছে