মেট্রোরেলের ট্রিপ বাড়ছে, বাড়ছে সময়সীমাও: উদ্যোগ ডিএমটিসিএলের

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীতে দিন দিন বেড়ে চলেছে মেট্রোরেলের যাত্রীচাপ। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ মানুষ রাজধানীর এই আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছেন।
বিশেষ দিনে এ সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। যাত্রীচাহিদা মেটাতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেলের চলাচলের সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রিপ সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিদিন উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে বর্তমানে প্রায় ২০০টি ট্রিপ পরিচালিত হচ্ছে। নতুন পরিকল্পনায় এই রুটে আরও ১০টি অতিরিক্ত ট্রিপ যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিদিন প্রায় ২৩ হাজার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল।
বর্তমানে সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও, নতুন সূচিতে তা সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই শুরু হতে পারে। রাতেও চলাচলের সময় আধঘণ্টা বাড়ানো হবে। এখন যেখানে উত্তরা থেকে শেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে ৯টা ৪০ মিনিটে, তা বাড়িয়ে রাত ১০টার পর পর্যন্ত চলাচলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবারেও সময়সূচি পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুক্রবার মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয় বিকেল ৩টায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, এটি শুরু হবে আড়াইটায়। রাতেও চলবে আরও আধঘণ্টা বেশি।
যাত্রীচাহিদা বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও আপাতত কোচ সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে প্রতিটি ট্রেন ৬ কোচ নিয়ে চলছে, যদিও শুরু থেকেই ৮ কোচের পরিকল্পনা ছিল। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) স্থাপন না হওয়া, বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজনীয়তার কারণে এখনই কোচ সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না।
নতুন সূচি অনুযায়ী, পিক আওয়ারে ট্রেন চলাচলের সময়ের ব্যবধান সর্বনিম্ন ৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে নামিয়ে আনা হবে। এছাড়া অন্যান্য সময়ে ৮ ও ১০ মিনিট পরপর ট্রেন চলাচল করত, সেটিও দুই মিনিট করে কমিয়ে আনা হবে। ফলে অপেক্ষার সময় কমবে এবং যাত্রী সেবার মান বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ট্রিপ বাড়ালেই হবে না, যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে দ্রুত কোচ সংখ্যা বাড়ানোও জরুরি। ট্রিপ বাড়ালে বিদ্যুৎ ব্যবহার ও পরিচালনা খরচও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে, যা দীর্ঘমেয়াদে চাপ তৈরি করতে পারে।
ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, ট্রিপ বৃদ্ধির বিষয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে দ্রুতই এমআরটি লাইন-৬–এ বাড়তি ট্রিপ চালু করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে স্টেশন ও রুট সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। বর্তমানে কমলাপুর পর্যন্ত রুট সম্প্রসারণের কাজ চলমান রয়েছে।
১১৯ বার পড়া হয়েছে