যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে নতুন ইন্টিগ্রিটি চার্জ, পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব

রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫ ৩:২৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে আগ্রহী বিদেশি নাগরিকদের জন্য নতুন করে ২৫০ ডলার "ভিসা ইন্টিগ্রিটি ফি" আরোপ করতে যাচ্ছে মার্কিন সরকার।
আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই ফি কার্যকর হবে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি দেশের ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত ভ্রমণ ও পর্যটন খাতে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এই নতুন ফি মূলত সেইসব দেশের নাগরিকদের ওপর প্রযোজ্য হবে, যাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা ওয়েভার সুবিধা নেই। এতে মেক্সিকো, ভারত, চীন, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলোর ভ্রমণকারীরা সরাসরি প্রভাবিত হবেন। নতুন ফি যোগ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য মোট ভিসা আবেদন খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ৪৪২ ডলার, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ের মধ্যে একটি।
টানা পাঁচ মাস পর্যটক কমেছে
মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে বিদেশি পর্যটকের আগমন গত বছরের তুলনায় ৩.১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখে। এটি চলতি বছরে টানা পঞ্চম মাস পর্যটক হ্রাসের নজির। মহামারির আগের পর্যায়ের তুলনায় এখনো বিদেশি পর্যটন খাত পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। এর আগে ধারণা করা হয়েছিল, ২০২৫ সালের মধ্যে বার্ষিক পর্যটক সংখ্যা ৭ কোটি ৯৪ লাখের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।
বিশ্লেষকদের উদ্বেগ
ভ্রমণ ব্যবস্থাপনা সংস্থা অলটুর-এর প্রেসিডেন্ট গেব রিজি জানান, “ভ্রমণ প্রক্রিয়ায় যত বেশি জটিলতা যোগ করা হবে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ততই কমে আসবে। গ্রীষ্মকাল শেষ হওয়ার পর এই ফি আরও বড় সমস্যার জন্ম দিতে পারে, কারণ তখন বাজেট ও নথিপত্র প্রস্তুতে বাড়তি চাপ পড়বে।”
ওয়ার্ল্ড ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিল (WTTC) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের খরচ ১৬৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসতে পারে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ১২ বিলিয়ন ডলার কম।
ভবিষ্যৎ ভ্রমণ ও ইভেন্টগুলোর ওপর প্রভাব
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতি, বিদেশি সহায়তায় কাটছাঁট এবং উচ্চ শুল্ক নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন আগ্রহ হারাচ্ছে অনেক বিদেশি।
এর আগে, আগস্টের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন একটি পাইলট প্রকল্প চালু করে, যার আওতায় নির্দিষ্ট কিছু পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভিসার জন্য আবেদনকারীদের ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত সিকিউরিটি বন্ড জমা দিতে হতে পারে। প্রকল্পটি ২০ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে এবং এক বছর পর্যন্ত চলবে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভিসার মেয়াদ শেষে যারা যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে না, তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা।
বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক সামনে, তবু অনিশ্চয়তা
যদিও ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের মতো বড় ইভেন্টগুলো সামনে রয়েছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের কড়াকড়ি নীতির কারণে বিদেশি দর্শনার্থীর সংখ্যা আশানুরূপ নাও হতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
১২৪ বার পড়া হয়েছে