সর্বশেষ

জাতীয়

রাজনৈতিক অস্থিরতা : সন্ধ্যায় যমুনায় জরুরি বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫ ২:০৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান মতভিন্নতার মধ্যেই হঠাৎ করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন।

এ প্রেক্ষাপটে আজ রোববার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠকে বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন 'যমুনা'-তে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, জামায়াতের সঙ্গে বিকেল সাড়ে চারটায়, এনসিপির সঙ্গে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এবং বিএনপির সঙ্গে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আলোচনা হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নুরুল হকের ওপর হামলা ঘিরে উত্তেজনা
গত শুক্রবার রাতে জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং সেই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের লাঠিপেটায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের আহত হওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে ওঠে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল।

এ ঘটনায় শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিশেষ বৈঠকে নুরুল হকের ওপর হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাপাকে নিষিদ্ধের দাবি ও আইনি মূল্যায়ন
গণ অধিকার পরিষদ এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। একই দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ঝিনাইদহে সাংবাদিকদের বলেন, “জাতীয় পার্টি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মানুষের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে। এখন তারা জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী লীগকে সহায়তা করে নিজেদের মুখোশ খুলে দিয়েছে।” তিনি জানান, দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবির আইনি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, আজকের বৈঠকগুলোতে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে।

জুলাই সনদে দলগুলোর মতানৈক্য

ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে প্রস্তাবিত "জুলাই জাতীয় সনদ" বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে। বিএনপি চায় এই সাংবিধানিক সংস্কার আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হোক। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি চায়, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক সংস্কার বাস্তবায়নের পর, অর্থাৎ সংস্কারকে নির্বাচনপূর্ব শর্ত হিসেবে দেখতে চায় তারা।

যদিও জামায়াত ও এনসিপির অবস্থান কিছুটা ঘনিষ্ঠ, বিএনপির সঙ্গে তাদের মতবিরোধ এখনো স্পষ্ট। ঐকমত্য কমিশন এই মতপার্থক্য ঘোচাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা
অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচন নির্ধারিত সময় অনুযায়ী হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক সমাবেশে বলেন, “একটি গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।”

তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে। সরকার অঙ্গীকার করেছে, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হবে এবং কোনো অশুভ শক্তিকে গণতন্ত্রের পথে বাধা দিতে দেওয়া হবে না।

অফিশিয়াল আলোচনা এখনও অনিশ্চিত

ঐকমত্য কমিশনের বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, এখনো দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়নি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক দল বা পৃথকভাবে আলোচনা চালানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য—দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে এনে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে জুলাই সনদের বিষয়টি চূড়ান্ত করা।

২৮৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন