তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, স্বস্তি ফিরছে পানিবন্দি মানুষের মাঝে

বৃহস্পতিবার , ৩১ জুলাই, ২০২৫ ৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে, ফলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১.৫৮ মিটার, যা বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টার দিকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে পৌঁছালে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিচু এলাকাগুলোতে হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ডুবে যায় রাস্তাঘাট, আমন ধানের ক্ষেত ও শাকসবজির চাষাবাদ। অনেক এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নৌকা ও ভেলাই একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে। পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাছচাষিরাও।
অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে এবং ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১৯৮ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পানি নামতে শুরু করেছে।
জেলার যেসব এলাকাগুলো থেকে পানি নামছে সেগুলো হলো:
পাটগ্রাম: দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোআনি, ছয়আনি, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী ও ডাউয়াবাড়ী
কালীগঞ্জ: ভোটমারি, শৈইলমারী ও নোহালী
আদিতমারী: মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া ও পলাশী
সদর উপজেলা: ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ি ও গোকুণ্ডা
জনদুর্ভোগ এখনও রয়ে গেছে
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, “৩৬ ঘণ্টা পানিবন্দি ছিলাম। শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করতে হয়েছে। টয়লেট ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে, এতে করে রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।”
বাগডোরা এলাকার রহিমা বেগম জানান, “এখনো পানি পুরোপুরি নামেনি। কেউ খোঁজও নিচ্ছে না। উল্টো এনজিওরা কিস্তির টাকা তুলতে আসছে। খুব কষ্টে আছি।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুণিল কুমার বলেন, “তিস্তার পানি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। পানি নামতে শুরু করেছে। তবে পানি কমার সময় নদীভাঙনের ঝুঁকি তৈরি হয়। এখনও পর্যন্ত কোথাও ভাঙনের খবর আসেনি।”
১৩৩ বার পড়া হয়েছে