মিটফোর্ডে খুন: আরও দুইজন গ্রেফতার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের অভিযোগ বিএনপির

রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫ ৮:১২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হত্যা মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ক্রাইম) নাসিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে বিস্তারিত তথ্য লালবাগ বিভাগের কর্মকর্তারা জানাবেন। ডিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, নেত্রকোনায় অভিযান চালিয়ে সজীব বেপারী ও রাজীব ব্যাপারী নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব না কি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র?
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) জসীম উদ্দিন বলেন, সোহাগ হত্যার প্রাথমিক তদন্তে চাঁদাবাজির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূলত ভাঙারি ব্যবসা ও দোকানের মালিকানা নিয়ে বিরোধ ছিল। নিহত সোহাগ ও অভিযুক্তদের একসঙ্গে ব্যবসার সম্পর্কও ছিল।”
তবে এ ঘটনার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছে বিএনপি। দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে।
বিএনপির প্রতিক্রিয়া ও অভিযোগ
জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, “যারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত, তাদের বাদ দিয়ে এজাহারে নিরপরাধ ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।” তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, “ঘটনার ভিডিও ফুটেজে হত্যার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মূল খুনিরা এখনো কেন গ্রেফতার হয়নি?”
বিএনপি দাবি করছে, তারা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করলেও একাংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দলটির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিএনপির মতে, অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই, অপরাধই প্রধান বিষয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে দলটি।
গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকারবিরোধী কণ্ঠরোধ করতে এবং নির্বাচনের আগমুহূর্তে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করতেই এ ধরনের ঘটনা ব্যবহৃত হচ্ছে। তারা বলেন, “পক্ষপাতমূলক তদন্ত, প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ধারণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা—সব মিলিয়ে এটি গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়।”
তারা আরও বলেন, “এক বছর আগে সংঘটিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিপরীতে ফের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে দুর্বল করে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা চলছে।”
বিএনপি জানিয়েছে, তারা সোহাগকে রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্য নয়, বরং একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আইনি সহায়তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পাশে থাকবে।
১৬৫ বার পড়া হয়েছে