সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক: গাজা যুদ্ধবিরতি ও ইরান ইস্যুতে আলোচনা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫ ৭:০৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৭ জুলাই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠকে গাজায় ২১ মাস ধরে চলা সংঘাতের অবসান, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। গাজা যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন ট্রাম্প, যেখানে কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে এবং যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।

প্রস্তাবিত চুক্তিতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির আওতায় হামাস ১০ জীবিত ও ১৮ মৃত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে; সেইসঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার কিছু অংশ থেকে সরে যাবে এবং মানবিক সহায়তা প্রবাহিত হবে। তবে চুক্তির স্থায়িত্ব ও শর্তাবলী নিয়ে এখনও দ্বন্দ্ব রয়েছে, বিশেষ করে মানবিক সহায়তা বিতরণ ও গাজা মানবিক ফাউন্ডেশনের ভূমিকা নিয়ে।

বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যা দুই নেতা শত্রুর বিরুদ্ধে বড় বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, ইরানের দুর্বল অবস্থান গাজা যুদ্ধের সমাধানে সহায়ক হবে। ট্রাম্প প্রশাসন ও ইসরায়েল সৌদি আরবসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন। নেতানিয়াহু বলেন, “গাজা যেন কারাগার না হয়, চাইলে ফিলিস্তিনিরা অন্যত্র যেতে পারবে।” ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু কিছু দেশকে গাজা থেকে যেতে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনিদের গ্রহণে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন, যদিও ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক মহল এটিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি হিসেবে দেখছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেন, ইসরায়েল গাজার ওপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং পূর্ণ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নাকচ করেন।

বৈঠকে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত করেন। বৈঠকের সময় হোয়াইট হাউসের বাইরে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) নেতানিয়াহু, ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন গাজা যুদ্ধের অবসান ও ইরানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অভিযানের কৃতিত্ব নিতে চায় এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-আরব সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী; তবে ইসরায়েলি ডানপন্থী জোটের অংশ কট্টরপন্থীরা যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং হামাস নিরস্ত্রীকরণের ইসরায়েলি দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থ এবং জটিল বাস্তবতা গাজায় স্থায়ী শান্তি অনিশ্চিত করে তুলেছে।

নেতানিয়াহু বৈঠকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসের দাবি করেন এবং গাজা ইস্যুতে নিজের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন, যদিও আন্তর্জাতিক মহলে এই সংকটের সমাধান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

১১৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন